বাংলাদেশকে ঘাঁটি করে ভারতে হামলার ছক হাফিজ সইদের, কাশ্মীরের নামে মহিলা আত্মঘাতী বাহিনী গড়ছে জৈশ
ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নতুন করে প্রশ্নের মুখে। একদিকে লস্কর-ই-তৈবা (LeT) প্রধান এবং আন্তর্জাতিক জঙ্গি হাফিজ সঈদ বাংলাদেশকে ঘাঁটি বানিয়ে পূর্ব সীমান্ত দিয়ে ভারতে হামলার ছক কষছে। অন্যদিকে, মাসুদ আজহারের জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদ (JeM) কাশ্মীরে সন্ত্রাস ছড়াতে মহিলাদের নিয়ে একটি ভয়ঙ্কর ‘ফিদায়েঁ’ বা আত্মঘাতী স্কোয়াড তৈরি করেছে। পাকিস্তান-ভিত্তিক এই দুই জঙ্গি সংগঠনের জোড়া চক্রান্তের খবর সামনে আসতেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। লস্করের নতুন ছক: টার্গেট বাংলাদেশ সম্প্রতি পাকিস্তানের খয়েরপুর তামেওয়ালিতে অনুষ্ঠিত একটি সমাবেশের ভিডিও থেকে লস্করের এই ভয়ঙ্কর পরিকল্পনার কথা ফাঁস হয়েছে। ৩০ অক্টোবরের ওই সমাবেশে লস্করের শীর্ষ কমান্ডার সইফুল্লা সইফ প্রকাশ্যে ঘোষণা করে, "হাফিজ সঈদ চুপ করে বসে নেই; তিনি বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।" ভিডিওটিতে সইফ দাবি করে, লস্করের জঙ্গিরা ইতিমধ্যেই 'পূর্ব পাকিস্তান' (অর্থাৎ বাংলাদেশ)-এ সক্রিয় রয়েছে এবং তারা ভারতের 'অপারেশন সিন্দুর'-এর বদলা নিতে প্রস্তুত। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, হাফিজ সঈদ ইতিমধ্যে তার এক বিশ্বস্ত সহযোগীকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে, যার মূল কাজ হলো 'জিহাদ'-এর আড়ালে স্থানীয় যুবকদের মৌলবাদে দীক্ষিত করা এবং জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা। উদ্বেগের বিষয় হলো, ওই সমাবেশে প্রচুর শিশুর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, যা প্রমাণ করে যে কচি বয়স থেকেই হিংসা ও চরমপন্থার বীজ বপন করার চেষ্টা করছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। সইফ তার ভাষণে দাবি করে, "আমেরিকা এখন আমাদের সঙ্গে, এবং বাংলাদেশও পাকিস্তানের কাছাকাছি আসছে," যা সমর্থকদের মনোবল বাড়ানোর একটি অপচেষ্টা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জৈশের ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা: মহিলা আত্মঘাতী স্কোয়াড অন্যদিকে, জৈশ-ই-মহম্মদ (JeM) তাদের মহিলা শাখা 'জামাত-উল-মোমিনাত' গঠন করেছে, যার নেতৃত্বে রয়েছে খোদ জঙ্গি প্রধান মাসুদ আজহারের বোন সাদিয়া আজহার। এই শাখার অধীনে মহিলাদের আত্মঘাতী হামলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সময় জৈশের বাহাওয়ালপুর ঘাঁটিতে সাদিয়ার স্বামী ইউসুফ আজহার নিহত হয়। জৈশ তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল 'আল-কালাম মিডিয়া'-র মাধ্যমে এই নতুন শাখার কথা ঘোষণা করেছে। তারা মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে যে, ভারতীয় বিমান হানায় বহু মহিলা নিহত হয়েছেন, যাতে সহানুভূতি আদায় করে নতুন সদস্য, বিশেষত মহিলাদের নিয়োগ করা যায়। গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, জৈশ কমান্ডারদের স্ত্রী এবং তাদের পরিচালিত ধর্মীয় স্কুলগুলির আর্থিকভাবে দুর্বল মহিলাদের টার্গেট করে এই আত্মঘাতী স্কোয়াডে भर्ती করা হচ্ছে। ভারতের প্রতিক্রিয়া ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা এই জোড়া হুমকির পর ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি হাই অ্যালার্টে রয়েছে। বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বহুগুণ বাড়ানো হয়েছে। আধিকারিকদের মতে, পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি একযোগে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে ভারতে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। নারী ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার এই নতুন কৌশলকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মনে করা হচ্ছে।
