ঐতিহাসিক সফর: ৫১ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানি যুদ্ধজাহাজ, উষ্ণ অভ্যর্থনা

৯ নভেম্বর, ২০২৫ | ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

দীর্ঘ ৫১ বছরের বিরতি শেষে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করল পাকিস্তানের একটি যুদ্ধজাহাজ। পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফের চার দিনের সফরের অংশ হিসেবে ফ্রন্টলাইন গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট ‘পিএনএস সাইফ’ আজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজটিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পাশাপাশি পূর্ণ আনুষ্ঠানিক সম্মাননা প্রদান করে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর এটিই প্রথম কোনো পাকিস্তানি যুদ্ধজাহাজের বাংলাদেশ সফর। উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান নৌবাহিনী তাদের নৌবহরের প্রায় ৪০ শতাংশ হারায় এবং বিশাখাপত্তনম উপকূলে সাবমেরিন ‘পিএনএস গাজী’র ডুবে যাওয়া ছিল তাদের জন্য একটি বড় বিপর্যয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে নির্দিষ্ট স্থানাঙ্কে পৌঁছানোর পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ‘পিএনএস সাইফ’কে আউটার অ্যাঙ্করেজ পর্যন্ত এসকর্ট করে নিয়ে আসে। পরে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ার পর পাকিস্তানি কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যান্ড দুই দেশের সংগীত পরিবেশন করে এক উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করে। সফরসূচি অনুযায়ী, আজ (৮ নভেম্বর) পাকিস্তানি নৌ কর্মকর্তা ও নাবিকদের জন্য "শোর লিভ" রাখা হয়েছে, যে সময়ে তারা চট্টগ্রামের আড়ং ও খুলশী মার্কেটে কেনাকাটার সুযোগ পাবেন। আগামীকাল, ৯ নভেম্বর, পাকিস্তানি নৌ প্রতিনিধিদল কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল (কমচিট) দপ্তর, ফ্লিট হেডকোয়ার্টার এবং বাংলাদেশ নেভি ফ্লোটিলার কার্যালয় পরিদর্শন করবেন। এদিন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা ‘পিএনএস সাইফ’ পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন এবং পরবর্তীতে দুই দেশের কর্মকর্তারা একটি যৌথ "প্যাসেজ এক্সারসাইজ" বিষয়ে সমন্বয় সভায় মিলিত হবেন। ১০ নভেম্বর চট্টগ্রাম নৌ স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের যুদ্ধজাহাজটি পরিদর্শনের জন্য নেওয়া হবে। এরপর পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের বিএনএস ঈসা খান ট্রেনিং কমপ্লেক্স পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হবে। পাকিস্তান নৌপ্রধানের ১১ নভেম্বরের কর্মসূচি অনেকটা গোপনীয় রাখা হলেও, তাকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সম্প্রসারণ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানানো হতে পারে এবং কক্সবাজার পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ১২ নভেম্বর বিকেলে ‘পিএনএস সাইফ’ চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করবে। এই সফর দুই দেশের নৌবাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।