বাংলাদেশ সীমান্তের পাশে ভারতের ৩ সেনা ঘাঁটি স্থাপন

৯ নভেম্বর, ২০২৫ | ৫:২২ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

ভারতের সিলিগুড়ি করিডোর যা সাধারণত 'চিকেন নেক' নামে পরিচিত। তা রক্ষায় বাংলাদেশের সীমানার কাছাকাছি তিনটি নতুন সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে নয়াদিল্লি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, পদক্ষেপটি পূর্ব সীমানায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করবে এবং সীমান্তীয় নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। সংবিধিবদ্ধ সূত্রে জানা যায়, এই ঘাঁটিগুলো গড়ে তোলা হয়েছে আসামের ধুবড়ির নিকটস্থ বামুনি, বিহারের কিশনগঞ্জ এবং পশ্চিমবঙ্গের চোপড়া অঞ্চলে। নয়াদিল্লির মতে, এসব ঘাঁটি সীমান্তে নজরদারি শক্তিশালী করা, কৌশলগত দুর্বলতা শোধন করা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া প্রদানের সক্ষমতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে পরিকল্পিত। সিলিগুড়ি করিডোর উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে সংযুক্ত করা একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু অত্যন্ত কৌশলগত মানের ভূখণ্ড; এর প্রস্থ মাত্র কয়েক দশ কিলোমিটার এবং করিডোরটির পার্শ্বে রয়েছে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও চীন। এই ভৌগলিক অবস্থানের কারণে করিডোরটি অঞ্চলটিকে নিরাপত্তাগতভাবে অতিসংবেদনশীল করে তোলে। নয়াদিল্লি নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতিতে কিছু পরিবর্তন লক্ষণীয় হয়েছে বিনিয়োগ ও অবকাঠামো ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের বৃদ্ধি এবং অন্য অঞ্চলের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ট কূটনৈতিক সংযোগ যা আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এসব পরিবর্তনকে মাথায় রেখে সিলিগুড়ি করিডোরের নিরাপত্তা আরও শক্তপোক্ত করা হচ্ছে। ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারা করিডোরটিকে দুর্বল নয় বরং তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা করিডোরগুলোর একটি হিসেবে দেখেন। তাদের বিবৃতি অনুযায়ী, নতুন ঘাঁটিগুলো দ্রুত মোতায়েনযোগ্যতা, লজিস্টিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা সমন্বয় বৃদ্ধি করবে এবং বহুমাত্রিক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলবে। এছাড়া, ওই অঞ্চলে নিয়মিত যুদ্ধাভ্যাস ও লাইভ-ফায়ার মহড়া পরিচালিত হয়, যেখানে আধুনিক ট্যাঙ্ক ও স্পেশাল সাপোর্ট সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। আকাশপথ সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট ও বহুস্তরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন রয়েছে যার মধ্যে দূরশ্রবণ ও লক্ষ্যনির্ধারণ সক্ষমতা সম্পন্ন সিস্টেমও রয়েছে। সরকারি মাপের প্রতিরক্ষা ব্যয় ও নতুন রেজিমেন্ট স্থাপনের বরাদ্দও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কড়াকড়ি করেছে বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। নতুন পদক্ষেপগুলোর উদ্দেশ্য যতটা প্রতিকূল আক্রমণ ঠেকানো, ততটাই ওই করিডোর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের দ্রুত প্রতিক্রিয়া ও লজিস্টিক সরবরাহ নিশ্চিত করা। একজন সামরিক পরিকল্পনাবিদ বলেছেন — “আমরা কোনো নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছি না; আমরা কেবল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করছি” — অর্থাৎ প্রাসঙ্গিক ভূরাজনৈতিক পরিবর্তনসমূহ বিবেচনায় রেখেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।