মেট্রোরেলের রক্ষণাবেক্ষণে নেই বরাদ্দ, দুর্ঘটনার দায় ঠিকাদারদের ঘাড়ে চাপালেন এমডি

৩ নভেম্বর, ২০২৫ | ১১:০৬ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

রাজধানীর মেট্রোরেলে একের পর এক দুর্ঘটনার পরও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আলাদা বরাদ্দ ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ না করলেও দুর্ঘটনার দায় ঠিকাদার ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের উপর চাপিয়েছেন ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ। একইসাথে দূর্ঘটনার পিছনে নকশাগত ত্রুটিও থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। সোমবার সকালে এক ব্রিফিংয়ে এসব দাবি করেছেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, “গত বছরের ঘটনার পর আমরা ফিজিক্যালি ও ড্রোনের মাধ্যমে ইন্সপেকশন করেছি। দুই মাস আগে আবারও পরীক্ষা করা হয়েছে। আমাদের প্রথম কাজ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।” জাপানিজ প্রযুক্তি ও নির্মাণশৈলিকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়ে তিনি দাবি করেন, “ডিজাইনে ভুল থাকতে পারে। নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার বা কাজ বুঝে না নেওয়াসহ নানা কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, যা তদন্তের পর নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।” তিনি বলেন, “কাজ বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের। তাদের অদক্ষতার কারণেও ঘাটতি থাকতে পারে। লাইন-১ প্রকল্পে বর্তমানে প্রকল্প পরিচালক নেই, তবে দ্রুত চার-পাঁচজন পরিচালক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।” ফারুক আহমেদ আরও বলেন, “মেট্রো আমাদেরই করতে হবে। আমরা চাই স্মার্ট ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে স্থানীয়দের গুরুত্ব দিয়ে কাজ এগিয়ে নিতে। কিন্তু ইনভেস্টরের সঙ্গে কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট আছে। আমাকে ৫০ বছরের ওয়ারেন্টি দেওয়া হয়েছে, সেখানে আমি অনেকটাই অসহায়।” তিনি জানান, নতুন প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনে নকশা পরিবর্তন করা হবে। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, মেট্রোরেলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এখনো পর্যন্ত কোনো স্বতন্ত্র বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়নি। সরকারি বাজেটেও এ খাতের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ নেই। এমনকি রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিটে পর্যাপ্ত প্রকৌশলী ও দক্ষ জনবল নেই। নিয়মিত লোড-টেস্ট ও ফিজিক্যাল ইন্সপেকশনও করা হয়নি। কেউ কেউ দাবি করেন, ডিজাইন ত্রুটি ও কম্পনজনিত ভার সঠিকভাবে মাপা না হওয়ায় বিয়ারিং প্যাড বা পিলারের ক্ষতি ধরা পড়েনি। অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের ঘাটতি এবং দায় এড়ানোর সংস্কৃতি মেট্রোরেলের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলছে। তাদের ভাষায়, ‘ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড’ শেষ হয়ে গেলে ঠিকাদারদের দায় সীমিত হয়ে যায়, ফলে প্রকৃত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব অস্পষ্ট থেকে যায়। তবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের দাবি, দুর্ঘটনার মূল কারণ নির্ধারণে তদন্ত চলছে।