বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের বিবৃতি
					 বাংলাদেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের দায়মুক্তি বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবসের (২রা নভেম্বর) প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের (এমএফসি) কূটনৈতিক নেটওয়ার্ক এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। এতে বাংলাদেশ সরকারের গণমাধ্যম খাত সংস্কারের অঙ্গীকার ও সাংবাদিকদের অধিকার সুরক্ষায় মিডিয়া রিফর্ম কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হয়। তবে বর্তমান সরকারের সময়ে সাংবাদিক নির্যাতন ও সাংবাদিকদের গণমামলায় আসামি করায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি। তারা অবিলম্বে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে। ২রা নভেম্বর, রোববার প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের দায়মুক্তি রোধ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় সব পক্ষকে জবাবদিহিতার মানদ- বজায় রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা যে গণতন্ত্রের ভিত্তি, সেটিও পুনর্ব্যক্ত করা হয়। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মটিতে বর্তমানে ছয় মহাদেশের ৫০টিরও বেশি দেশ সদস্য। বাংলাদেশের বিষয়ে দেওয়া সর্বশেষ এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, কসোভো, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোয়ালিশনের সদস্য হলেও এই বিবৃতিতে তারা স্বাক্ষর করেনি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গণমাধ্যমে লিঙ্গ সমতা ও নারী সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিতে হবে। নারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অনলাইন সহিংসতা ও হয়রানির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময় সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, মামলা ও হামলার ঘটনাগুলো উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। ইউনূস সরকারের আমলে একাধিক সাংবাদিককে মিথ্যা মামলায় জড়ানো, কর্মস্থলে হামলা-দখল, আদালতে হেনন্তা ও প্রকাশ্য মব হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনেক সাংবাদিককে অনুষ্ঠানস্থল থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া বা মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অতীতের কোনো সরকারের সময় এমন ভয়াবহ সাংবাদিক নির্যাতনের নজির নেই। গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের এই বিবৃতি সেই জরুরি বাস্তবতাকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
