আধুনিক ব্যালাস্টিক হেলমেটে সজ্জিত আরসা সদস্যরাঃ বৈদেশিক শক্তির সহয়তার আভাস

২৯ অক্টোবর, ২০২৫ | ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)-এর যোদ্ধাদের মাথায় উন্নতমানের ব্যালাস্টিক হেলমেট দেখা গেছে বলে সাম্প্রতিক দাবি উঠেছে, যা স্পেশাল ফোর্স-স্তরের সরঞ্জাম হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন সরঞ্জামের উপস্থিতি যদি সত্যি হয়, তাহলে আরসার যুদ্ধক্ষমতা বাড়ানোর পেছনে বৈদেশিক শক্তির হাত থাকতে পারে, বিশেষ করে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর। আর এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে বাংলাদেশই একমাত্র রুট, যেই মাধ্যমে এই সকল আধুনিক সমরাস্ত্র আরসার হাতে পৌছাচ্ছে। আরসা, যা ২০১৬ সালে গঠিত রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইন অঞ্চলে সংঘাত তীব্রতর হয়েছে, যাতে আরাকান আর্মি বাংলাদেশকে আরসার সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগ করেছে। দাবি করা হয়েছে যে আরসার যোদ্ধারা মডিউলার ইন্টিগ্রেটেড কমিউনিকেশনস হেলমেট (এমআইসিএইচ) শ্রেণির বুলেটপ্রুফ হেলমেট ব্যবহার করছে, যা ৯ মিলিমিটার বুলেট প্রতিরোধ করতে সক্ষম এবং নাইট ভিশন গগলস বা কমিউনিকেশন ডিভাইস সংযুক্ত করার সুবিধা রয়েছে। এ ধরনের হেলমেট সাধারণত নিয়মিত সেনাবাহিনী বা বিশেষ ইউনিটে দেখা যায়, যেমন বাংলাদেশের সোয়াট বা প্যারা-কমান্ডো। তবে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকায় এমন সরঞ্জামের স্থানীয় উৎপাদন বা বিক্রির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, যা বৈদেশিক সোর্সের ইঙ্গিত দেয়। পাকিস্তানের আইএসআই-এর সঙ্গে আরসার যোগাযোগের অভিযোগ নতুন নয়। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএসআই রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে সাহায্য করছে এবং বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনা করছে। ২০২৫ সালের আগস্টে আরসা আরাকান আর্মির উপর হামলার দায় স্বীকার করেছে, যা পাকিস্তান-সমর্থিত বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আইএসআই-এর প্রভাবের খবরও এসেছে, যা জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর মতো গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাতে বৈদেশিক হস্তক্ষেপ রাখাইন অঞ্চলের নিরাপত্তা ভারসাম্যকে জটিল করে তুলছে। বাংলাদেশ এখনও সরাসরি জড়িত না হলেও, সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে। আরাকান আর্মির অভিযোগ সত্ত্বেও, বাংলাদেশ সরকার এসব দাবিকে খারিজ করেছে। সংঘাতের ফলে রোহিঙ্গা এবং রাখাইন বেসামরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপের আহ্বান উঠছে।