কারাগারে চিকিৎসা না পেয়ে আরও এক বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু

২৯ অক্টোবর, ২০২৫ | ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ মোস্তফা খান বাচ্চু (৮০) মৃত্যুবরণ করেছেন। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) মৃত্যুর বিষয়টি সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার এ.এস.এম. কামরুল হুদা নিশ্চিত করেছেন। জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে তিনি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি এনায়েতপুর দরবার শরীফ এলাকার বাসিন্দা এবং একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার মৃত্যুতে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের (নিষিদ্ধ দল) বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। সিরাজগঞ্জ কারাগারের জেল সুপার এস. এম. কামরুজ্জামান বলেন, তিনি গত ২৪ এপ্রিল থেকে কারাগারে ছিলেন। এনায়েতপুর থানায় হামলা ও ১৫ পুলিশ সদস্য হত্যা মামলাসহ চারটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বিএনপি-জামাতের নেতৃত্বে এনায়েতপুর থানায় হামলার ঘটনার কথা বিএনপি নেতারা স্বীকার করলেও এ মামলায় আসামী করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ করে। এর আগে ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে আতাউর রহমান (আঙ্গুর) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। আতাউর রহমান (৫৫) সিরাজগঞ্জ পৌরসভার দত্তবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা এবং পৌর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও বিনা চিকাৎসায় আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ১২ জন নেতা মারা গিয়েছে ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে, যাদের অনেকেই অসুস্থ হওয়ার পরেও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। বগুড়া জেলেই ৫ আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু বগুড়া জেলা কারাগারে চলতি বছরের ১১ মার্চ এমদাদুল হক ভুট্টু (৫১) নামে আরও এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ৫ আগস্টের পর হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার পাঁচ নেতার মৃত্যু হলো। জেলার সৈয়দ শাহ শরীফ এ তথ্য দিয়েছেন। এর আগে গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা কারাগার ও হাসপাতালে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের চার নেতার মৃত্যু হয়। এরা হলেন- ১১ নভেম্বর বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রতন, ২৫ নভেম্বর শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ, ২৬ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহাদত আলম ঝুনু এবং ৯ ডিসেম্বর গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, দুর্গাহাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি ও দুর্গাহাটা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মিঠু। এদিকে বগুড়া জেলা কারাগারে এক মাসে চার আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা কারাগার কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তবে এ কমিটির কার্যক্রম নেই বললেই চলে। এর অগ্রগতি সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কেরাণীগঞ্জ কারাগারেও মারা গেছেন একাধিক নেতা সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমান সুজন (৪৫) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) গলায় ফাঁস দেওয়া লাশ উদ্ধার করা হয়। এ বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর বিনা চিকিৎসায় কারাবন্দী সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন (৭৫) মারা গেছেন। তাকেও কেরাণীগঞ্জ কারাগারে বিনা চিকিৎসায় রাখা হয়েছিল, জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণের শেষ পর্যায়ে থাকার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পথে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া গত ২৩ জুলাই মানিকগঞ্জ কারাগারে বাবুল হোসেন (৫৫) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। বাবুল হোসেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।