বিমানবন্দরে আগুনে ওষুধ শিল্পে বিপর্যয়: ভ্যাট-ট্যাক্স ফেরত চান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা

২২ অক্টোবর, ২০২৫ | ৭:৫৩ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে দেশের ওষুধ শিল্পে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে এসেছে। আগুনে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামাল পুড়ে যাওয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হরমোন ও ভ্যাকসিন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যা দেশের ওষুধ উৎপাদনেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ (বিএপিআই) মঙ্গলবার গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করে। তারা বলেন, সরকারের ব্যর্থতায় বিমানবন্দরে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়ায় এই ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে সরকারি কোষাগারে দেওয়া শুল্ক, ডিউটি ও ভ্যাট ফেরত দেওয়ার দাবি জানানো হয়। সংগঠনের মহাসচিব জাকির হোসেন জানান, অগ্নিকা-ে দেশের শীর্ষস্থানীয় অন্তত ৪৫টি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ২০০ কোটি টাকার কাঁচামালের ক্ষতি হয়েছে, যা আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে দেশে সক্রিয় ২৫০টি ওষুধ কোম্পানির একটি বড় অংশ এই ক্ষতির শিকার। ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচামালের মধ্যে অনেক ছিল বিশেষ তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য এবং বেশিরভাগই নারকোটিকস বিভাগের অনুমোদন নিয়ে আমদানি করা, যা পুনরায় আমদানির প্রক্রিয়ায় সময় ও জটিলতা সৃষ্টি করবে। ফলে ওষুধ উৎপাদনে দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিএপিআই-এর পক্ষ থেকে তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়: শুল্ক, ডিউটি ও ভ্যাটের অর্থ ফেরত দেওয়া, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের ওপর সরকারকে পরিশোধ করা হয়েছে। ব্যাংক এলসি চার্জ ও সুদ মওকুফ করা এবং নতুন করে কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো যেন সুদ, চার্জ ও মার্জিন ছাড়া সহজ শর্তে এলসি খোলার সুযোগ দেয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, শুধু কাঁচামাল নয়, স্পেয়ার পার্টস ও মেশিনারিজও আগুনে পুড়ে গেছে, যার ফলে উৎপাদন ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রতা দেখা দেবে। এ ছাড়া দেশের অন্য বিমানবন্দরে পৌঁছানো কাঁচামাল নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, কারণ সেগুলোর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ সংরক্ষণে এখন বড় চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। ওষুধ শিল্প সমিতির নেতারা অভিযোগ করেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও ঝুঁকিব্যবস্থাপনায় সরকারের অবহেলাই এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাভাবিক উৎপাদনে ফেরার জন্য দ্রুত সরকারি সহায়তা প্রয়োজন বলে তারা জোর দাবি জানান।