ইতালিতে ড. ইউনূসের অপ্রয়োজনীয় সফর: বিশ্ব খাদ্য ফোরামে অংশগ্রহণ নিয়ে সমালোচনার ঝড়

১২ অক্টোবর, ২০২৫ | ১১:১৪ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আজ ইতালির রোম রওনা হয়েছেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) নামক কার্যক্রমে অংশ নিতে। কিন্তু এই সফর নিয়ে দেশে ব্যাপক সমালোচনা উঠেছে। অনেকে এটিকে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় এবং সম্পদের অপচয় বলে অভিহিত করছেন; বিশেষ করে যখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা হিসেবে ড. ইউনূসের ভ্রমণমুখী মনোভাব ক্রমশ প্রশ্নের মুখে পড়ছে। ড. ইউনূস আজ সকাল সাড়ে ১১টার ফ্লাইটে রোম যাত্রা করেন। সেখানে তিনি বিশ্ব খাদ্য ফোরামের (ডব্লিউএফএফ) প্রধান সেশনে কী-নোট স্পিচ দেবেন এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের কার্যক্রম রয়েছে। সফর ১৫ই অক্টোবর শেষ হবে। এই ফোরামটি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত। কিন্তু সরকারি বিবৃতিতে একে ডব্লিউএফপি ইভেন্ট বলা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর বলে সমালোচকরা মন্তব্য করছেন। এই সফরের সময়সীমা এবং প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গত ২৫শে সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের মার্জিনে ড. ইউনূস এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে, যেখানে নিরাপদ অভিবাসন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। এমনকি ইতালির প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনাও আলোচনায় এসেছে- যা ইতিপূর্বে বাতিল করা হয়েছিল। এরপরও আবার ইতালি সফর কেন- এ নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কোনো আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণের ভিত্তিতে নয়, বরং ড. ইউনূসের বিদেশ ভ্রমণের “অভ্যাস” এর ফল। অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা হিসেবে যেখানে ব্যয় সংকোচন নীতি প্রতিপালন করার কথা তার, সেখানে তার কিছুদিন পরপর বিশাল সঙ্গী-সাথীর লটবহর নিয়ে বিদেশ সফর রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে ঝুঁকিতে ফেলছে। এসব সফর থেকে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো প্রাপ্তি নেই, এ নিয়েও রয়েছে তীব্র সমালোচনা। ইতালি সফর নিয়ে বলা হচ্ছে, ড. ইউনূস সকল সৌজন্যতা এবং আমন্ত্রণ গ্রহণ এবং রক্ষা করে চলেছেন নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ করতে। এমনকি তিনি চাইলে ভার্চুয়ালি কী-নোট স্পিচ দিতে পারতেন, বলছেন একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক। এশিয়ার অন্য কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান এই ফোরামে ব্যক্তিগতভাবে অংশ নিচ্ছেন না। সাধারণত এমন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত বা রাষ্ট্রমন্ত্রী পাঠানো হয়। কিন্তু ড. ইউনূসের সফরকে তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম “গুরুত্বপূর্ণ” বলে উপস্থাপন করছেন। সমালোচকদের প্রশ্ন, “দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে এই সফরের খরচ কে দেবে? এটি কি জনগণের টাকার অপচয় নয়?” ইতালি সফরটিকে গণ্য করলে ক্ষমতায় জাঁকিয়ে বসার পর এটি ড. ইউনূসের ১৪তম বিদেশ সফর। এ নিয়ে প্রকাশ্যেই চলছে সমালোচনা। রাজনৈতিক মহলে এই সফরকে “ব্যক্তিগত প্রচারের সুযোগ” বলে অভিহিত করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের এই ভ্রমণমুখী নীতি দেশের স্থিতিশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এদিকে, ফোরামে খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য এবং টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হলেও, এতে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ হাসিল হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, সরকারকে দেশীয় সমস্যা সমাধানে মনোনিবেশ করতে হবে, বিদেশী ভ্রমণ কমিয়ে। দেশের স্থিতিশীলতার জন্য এখন সকল পক্ষের দায়িত্বশীলতা অপরিহার্য।