মারিয়া কোরিনা কি নিজ ভুবনে শান্তিতে আছেন?

ভেনেজুয়েলার গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় অবদানের জন্য শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন বিরোধী নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। নরওয়ের নোবেল কমিটির মতে, তিনি দেশের বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করেছেন এবং সামরিকীকরণের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার ছিলেন। গুরুতর হুমকি ও বিরোধে তিনি এখনো আচ্ছন্ন আছেন। শুধু তাই নয়, মাচাদো ভেনেজুয়েলায় নিজের দেশেই আত্মগোপনে রয়েছেন, যা লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। উচ্চবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া মাচাদো ১৯৬৭ সালে কারাকাসে জন্মগ্রহণ করেন। ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রকৌশলে স্নাতক এবং অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। ১৯৯২ সালে তিনি ‘অ্যাথেনিয়া ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা পথশিশুদের কল্যাণে কাজ করে। রাজনীতিতে প্রবেশের আগে ‘সুমাতে’ ভোট পর্যবেক্ষণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১০ সালে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১২ সালে ‘ভেন্তে ভেনেজুয়েলা’ রাজনৈতিক দল গড়ে তোলেন। মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ার পর রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হন। উদার অর্থনৈতিক সংস্কার, সরকারি প্রতিষ্ঠান বেসরকারীকরণ এবং দরিদ্রদের কল্যাণমূলক কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয় ছিলেন। ২০২৩ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাথমিক বাছাইয়ে মনোনীত হলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি পাননি। সহকর্মী অ্যাডমান্ডো গঞ্জালেসকে সমর্থন দিয়ে দেশের স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে অবদান রেখেছেন। কঠোর দমন, গ্রেপ্তার এবং হুমকির মাঝেও দেশে আত্মগোপনে থেকে তিনি গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। মাচাদো তিন সন্তানের জননী। জীবন ও নিরাপত্তার হুমকির কারণে তার সন্তানরা বিদেশে বসবাস করছেন। মানবাধিকার রক্ষায় তার অবদানের জন্য তিনি ‘ভাচলাভ হাভেল হিউম্যান রাইটস প্রাইজ’ ও ‘সাখারভ প্রাইজ’সহ বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। মাচাদোর জীবন ও সংগ্রাম প্রমাণ করে যে, গণতন্ত্রের জন্য ধৈর্য, সাহস ও আত্মত্যাগই সবচেয়ে বড় শক্তি। আর সেটিই তার জীবনে শান্তি এনে দিয়েছে।