ট্রাম্পকে হারিয়ে নোবেল জেতা কে এই মাচাদো?

২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী রাজনৈতিক নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নরওয়ের রাজধানী অসলোতে নোবেল কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেয়। এই নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রত্যাশী ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুরস্কারের ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘ভেনেজুয়েলার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় নিরলস সংগ্রাম, রাজনৈতিক নিপীড়নের বিপরীতে শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনের প্রয়াস এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নির্বাচনী অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে ২০২৫ সালের শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হলো।’ ১৯৬৭ সালে জন্ম নেওয়া মারিয়া কোরিনা মাচাদো দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। তিনি রাজনৈতিক দমন, হুমকি ও বহিষ্কারের মুখে থেকেও নিজ অবস্থান থেকে পিছু হটেননি। প্রকৌশল ও অর্থনীতিতে পড়াশোনা করা মাচাদো ১৯৯২ সালে কারাকাসে পথশিশুদের জন্য আতেনেয়া ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর ২০০২ সালে তিনি ‘সুমাতে’ নামক একটি সংস্থা গড়ে তোলেন, যা সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোটার অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করে। ২০০৫ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনায় আসেন, আর ২০১০ সালে তিনি রেকর্ড ভোটে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০১৪ সালে ক্ষমতাসীন সরকার তাকে বিতর্কিতভাবে বহিষ্কার করে। বর্তমানে তিনি বিরোধী দল ‘ভেন্তে ভেনেজুয়েলা’র নেতা। ২০১৭ সালে তিনি ‘সয় ভেনেজুয়েলা’ নামে একটি জোট গঠন করেন, যা দেশজুড়ে গণতন্ত্রপন্থী দলগুলোর সমন্বয় ঘটায়। ২০২৩ সালে মাচাদো ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলেও, সরকার তার প্রার্থিতা বাতিল করে। এরপর তিনি বিকল্প প্রার্থী এদমুন্দো গনজালেস উরুতিয়ার পক্ষে অবস্থান নেন। বিরোধী জোটের দাবি, সেই নির্বাচনে তারা জয় পেয়েছে, কিন্তু সরকার ফল জালিয়াতি করে ক্ষমতায় থেকেছে। নোবেল কমিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গণতন্ত্র মানে শুধু ভোট নয়—তা মানে স্বাধীন মত প্রকাশ, অংশগ্রহণের অধিকার ও ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব। এই মৌলিক অধিকারগুলোই শান্তির ভিত্তি। মারিয়া কোরিনা মাচাদো সেই মূল্যবোধগুলোর জন্য শুধু নিজ দেশে নয়, বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।’