কারা হেফাজতে থাকা শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের মৃত্যু

বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে এবং কারাগারের কঠোর নিরাপত্তার মাঝেও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। গত বছরের আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে দেশের বিভিন্ন কারাগারে এবং পুলিশি হেফাজতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অর্ধ শতাধিক নেতাদের মৃত্যুর ঘটনায় মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন কারা হেফাজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছেন। মৃত্যুকালে মন্ত্রী হুমায়নের বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি তার ছেলে মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীও ফেসবুক পোস্টের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। স্বজনরা জানান, গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত বছরের ২৫শে সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি। এরপর থেকে বন্দি ছিলেন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে। ২৭শে সেপ্টেম্বর সেখানে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে। সকালে সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, কারাগারে শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের ওপর শারীরিক ও মানসিক নিপীড়ন চালিয়েছে ইউনূস সরকার। যার ফলে তিনি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন গত এক বছর যাবৎ। আর এভাবেই তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এর আগে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। গত বছরের ২৫শে সেপ্টেম্বর সকালে র্যাবের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার আ ন ম ইমরান খান জানিয়েছিলেন সংসদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তিনি জানান, গত ৪ঠা আগস্ট নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালীন ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাব) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০৮ সালে নবম ও ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ১০ম জাতীয় সংসদে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।