আওয়ামী লীগের দোসররা আড্ডা দেয় অভিযোগে উত্তরায় পাঠাগার গুঁড়িয়ে দিল বৈছা নেতারা

রাজধানীর রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট আবাসিক এলাকার একটি পাঠাগারে আওয়ামী লীগের দোসররা নিয়মিত আড্ডা দেন—এমন অভিযোগ তুলে সেখানে ভাঙচুর চালিয়ে বৈছা সন্ত্রাসীরা। এ সময় পাঠাগারে থাকা বই, চেয়ার–টেবিল ও অন্যান্য আসবাবও লুটে নিয়ে গেছে তারা। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে। দীর্ঘদিন ধরে ‘ইউনাইটেড ব্রাদার্স’ নামে একটি ক্রিকেট ক্লাব এই পাঠাগারটি পরিচালনা করছে। পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবাসিক এলাকার চার নম্বর গেটের সামনে একটি দোকানে একজনকে মারধর করা হয়। সেই ঘটনার জের ধরে রাত আড়াইটায় ক্লাব মাঠ এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র (বৈছা) সমন্বয়ক রাসেল হোসেন, হাবিবুল বাশার ও আবরার হানিফের অনুসারীরা এবং অপরপক্ষ মোস্তাফিজ হাবিব সুনমের সমর্থকেরা। সংঘর্ষে বৈছার তুরাগ থানার যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল হোসেনসহ কয়েকজন আহত হন। অভিযোগ রয়েছে, পাঠাগার থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় বৈছার সাবেক নেতারা ভাঙচুর চালান। হামলাকারীদের দাবি—পাঠাগারে আওয়ামী লীগের দোসররা আড্ডা দিতেন। উন্মুক্ত পাঠাগারের পূর্বের অবস্থা ঘটনার পর ইউনাইটেড ব্রাদার্স ক্লাবের সভাপতি আব্দুল্লাহ ফাহাদ তুরাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ‘উন্মুক্ত পাঠাগার’ ও ক্লাবের অস্থায়ী অফিসকক্ষে ভাঙচুরের পাশাপাশি বই, ৪০টি চেয়ার, ৫টি টেবিল, ৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা, হার্ডডিস্ক, রাউটার, মাঠের ৩০টি ফ্লাডলাইট ও ক্রিকেট সামগ্রীসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে। এছাড়া পাঠাগার ও অফিস ভাঙচুরে প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ ফাহাদ আল ফয়সাল জানান, “দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে আমাদের পাঠাগারে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের অনুসারীরা এখানে আড্ডা দেয়—এই অজুহাতে হামলা চালানো হয়।” অন্যদিকে বৈছা নেতা রাসেল হোসেন অভিযোগ করেন, পাঠাগারের ভেতর থেকে প্রায় ২০-৩০ জন দা, লাঠি ও স্টাম্প নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। এতে তার হাত ভেঙে যায়। ক্ষোভে “সাধারণ মানুষ” যেখানে লাঠিসোঁটা ছিল, সেসব জায়গা ভাঙচুর করে। তবে তার দাবি, পাঠাগার ভাঙচুর করা হয়নি; বরং ঘটনাকে অন্যদিকে নিতে পাঠাগার ধ্বংসের অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে। এ নিয়ে প্রতিপক্ষ মোস্তাফিজ হাবিব সুনম বলেন, “বৈছা নেতারা এলাকায় অবৈধ দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি করছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা রাতুল ও পারভেজ নামে দুই ছেলেকে মারধর করে। আমি মীমাংসা করতে গেলে রাসেল, আবরার ও আবুল বাশার দুর্ব্যবহার করে। এতে আমার সঙ্গে থাকা ছেলেরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের মারধর করে। পরে তারা প্রতিশোধে পাঠাগার ভাঙচুরের মতো জঘন্য কাজ করেছে।” তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, “দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে পাঠাগার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। তবে রাতের অন্ধকারে কারা ভাঙচুর চালিয়েছে, তা এখনো শনাক্ত করা যায়নি।”