ব্যাংক কর্মীদের উৎসাহ বোনাস নিয়ে নতুন নির্দেশনা

রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক, তপসিলি বিশেষায়িত ব্যাংক, অ-তপসিলি বিশেষায়িত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের উৎসাহ বোনাস ব্যবস্থায় নতুন নির্দেশনা জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, এখন থেকে বছরে সর্বোচ্চ তিনটি উৎসাহ বোনাস দেওয়া যাবে। বোনাস দেওয়ার ভিত্তি পরিচালন মুনাফা হবে না। নিট মুনাফার ভিত্তিতে দেওয়া হবে। ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা থেকে ঋণ ও অগ্রিমের ওপর প্রভিশন, বিনিয়োগের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধির প্রভিশন এবং অন্যান্য সম্পদ হ্রাস-বৃদ্ধির প্রভিশন সমন্বয় করে নিট মুনাফার হিসাব করতে হবে। ব্যাংকগুলোতে উৎসাহ বোনাস দেওয়ার ক্ষেত্রে এতদিন শৃঙ্খলার ঘাটতি ছিল। ঘাটতি দূর করার জন্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই অভিন্ন উৎসাহ বোনাস নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়, রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল উৎসাহ বোনাস দেবে পাঁচটি উপাদান বা কর্মসম্পাদন পরিমাপকের ভিত্তিতে। এগুলো হচ্ছে, চলতি মূলধনের ওপর নিট মুনাফার হার, আমানতের পরিমাণ বৃদ্ধির হার, ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ বৃদ্ধির হার, খেলাপি ঋণ আদায়ের হার এবং অবলোপন করা ঋণ আদায়ের হার। একই পদ্ধতিতে বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), কর্মসংস্থান ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ও আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের বোনাস নির্ধারিত হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ক্ষেত্রেও পাঁচটি সূচক বিবেচনায় থাকলেও কিছুটা পরিবর্তন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে চলতি মূলধনের ওপর নিট মুনাফার হার, বিনিয়োগের বিপরীতে লভ্যাংশ ও মুলধনি মুনাফা অর্জনের হার, খেলাপি ঋণ আদায়ের হার, পুঁজিবাজারে সংস্থাটির লেনদেন বৃদ্ধির হার এবং অবলোপন করা ঋণ আদায়ের হার বিবেচনায় নেওয়া হবে। বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের (বিএইচবিএফসি) ক্ষেত্রে চলতি মূলধনের ওপর নিট মুনাফার হার, আদায়যোগ্য ঋণের মধ্যে বার্ষিক প্রকৃত আদায় হার এবং ঋণ ও বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধির হার বিবেচনায় নেওয়া হবে। মূল্যায়নের ভিত্তিতে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৪০-এর নিচে পেলে কোনো বোনাস দেওয়া যাবে না। ৪০-৫০ নম্বরের ক্ষেত্রে একটি, ৫০-৬০ নম্বরে দেড়টি, ৬০-৭০ নম্বরে দুটি, ৭০-৮০ নম্বরে আড়াইটি এবং আশির বেশি নম্বর পেলে তিনটি বোনাস দেওয়া যাবে। একটি বোনাস বলতে এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বোঝাবে। হিসাব বছরের শেষ মাসের প্রাপ্য মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ উৎসাহ বোনাসের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হবে। নির্দেশিকার আলোকে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজ নিজ পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে উৎসাহ বোনাস দেবে। নিজ নিজ পরিচালনা পর্ষদের সুপারিশের ভিত্তিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অনুমোদন নিয়ে উৎসাহ বোনাস দেবে। কোনো বছরে উৎসাহ বোনাস প্রাপ্য না হলে প্রতিষ্ঠানের বিশেষ কোনো অর্জন বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সুপারিশের ভিত্তিতে আবেদন করলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারবে।