আন্তর্জাতিক অপশক্তির সাথে সম্পৃক্ত শিশু বক্তার দম্ভোক্তি: আমরা এখন আর আঞ্চলিক খেলোয়াড় না

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৭:৩১ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের নতুন করে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে শিশু বক্তা খ্যাত মৌলবাদী নেতা রফিকুল ইসলাম মাদানীর বক্তব্য। গতকাল ২৪শে সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার চন্দ্রপুর বাজারে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি সরাসরি বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক মাঠের প্লেয়ার, আমাদের আঞ্চলিক প্লেয়ার বানাইয়েন না।” তার এই বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তারা কেবল স্থানীয় শক্তি নয়, বরং বিদেশি সংস্থার সহায়তায় কাজ করছে—এমন সন্দেহ একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেয়ার এই প্রচেষ্টা নিছক রাজনীতির অংশ নয়, বরং এর পেছনে বিদেশি শক্তির সুস্পষ্ট মদদ রয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনে মৌলবাদীদের অংশগ্রহণ ও তা নিয়ে বিদেশি সংস্থাগুলোর ‘বৈশ্বিক মানবাধিকার’ ইস্যুতে কথা বলা এখন আর নিছক কাকতালীয় মনে হচ্ছে না। সমাবেশে মাদানী বলেন, “ইসলামবিরোধী অবস্থানে থাকার কারণে হাসিনার মসনদ যেভাবে কাঁপিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছি, ইসলামবিরোধী অবস্থান যদি এ সরকারও নেয় তাহলে তার মসনদও আমরা নাড়িয়ে দেব, ইনশাআল্লাহ।” তার এ বক্তব্যে সরাসরি সরকার পতনের হুমকি ও অতীতে তাদের ভূমিকা নিয়ে গর্ব প্রকাশ করেছেন তিনি। অথচ, একটি গণতান্ত্রিক দেশে এরূপ মন্তব্য স্পষ্টতই রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয়। শিশু বক্তার বক্তব্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে, শুধু তারা নয়, আরও অনেকে—যাদের পরিচয় এখনো স্পষ্ট নয়—বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশে কোটা আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। এক সময় ছাত্রদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন হিসেবে বিবেচিত এই আন্দোলনের পেছনে যদি সত্যিই মৌলবাদী ও আন্তর্জাতিক শক্তির সম্পৃক্ততা থাকে, তবে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। সমাবেশে দুই দফা দাবি না মানলে সাত দফা কর্মসূচি ঘোষণা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অপসারণের হুমকিও দিয়েছেন মাদানী। বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসিকে প্রত্যাহার না করলে পুরো জেলা অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এই ধরনের চাপ সৃষ্টি এবং প্রশাসনিক অচলতা সৃষ্টি করার হুমকি প্রমাণ করে যে, এসব দাবির পেছনে কেবল ধর্মীয় আবেগ নয়, রয়েছে সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র এবং বিদেশি শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রয়াস। রফিকুল ইসলাম মাদানীর বক্তব্য শুধু ধর্মীয় উসকানি নয়, বরং রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিদেশি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে। তার ‘আন্তর্জাতিক মাঠের খেলোয়ার’ হওয়ার দাবির ভেতরেই লুকিয়ে আছে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের বহুমাত্রিক পরিকল্পনা। এখন সময় এসেছে এসব বক্তব্য ও কর্মসূচির পেছনের শক্তিকে খুঁজে বের করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার।