কৃষি মন্ত্রণালয়ে সার আমদানিতে নজিরবিহীন লুটপাট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা

১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৭:০৯ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার আমদানি প্রক্রিয়ায় অভূতপূর্ব অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ তুলে তীব্র সমালোচনা করেছেন সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ইউটিউবার জুলকারনাইন সায়ের। তিনি তার ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, “সরকারি অর্থ লোপাটের এ ধরণের অভিনব উদ্যোগ আমি আগে দেখিনি। এ যেন আয়োজন করে রাষ্ট্রের টাকা লুটপাট।” এ ঘটনায় দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা কৃষি মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে কার্যাদেশ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জুলকারনাইন বলেন, সার আমদানির জন্য দরপত্রে সর্বনিম্ন দর অনুযায়ী কার্যাদেশ দেওয়ার বিধান থাকলেও, মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা ‘নেগোসিয়েশন’-এর নামে নিয়ম লঙ্ঘন করে একই প্রতিষ্ঠানকে ভিন্ন ভিন্ন মূল্যে সার আমদানির অনুমতি দিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে দুটি কার্যাদেশে মোট ৮০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একটি কার্যাদেশে মিশর থেকে ৮৭৪ ডলার/টন এবং চীন থেকে ৮৪৮ ডলার/টন মূল্যে ৪০ হাজার টন সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। অপর কার্যাদেশে রাশিয়া থেকে ৮৬৫ ডলার/টন এবং চীন থেকে ৮৪৮ ডলার/টন মূল্যে আরও ৪০ হাজার টন সার আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। একইভাবে এনআরকে হোল্ডিং নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার চীন থেকে ৮৪৮ ডলার/টন মূল্যে আমদানির কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এছাড়া, টিএসপি সার আমদানিতেও একই ধরনের অনিয়ম দেখা গেছে। দেশ ট্রেডিং কর্পোরেশনকে ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানির জন্য মরক্কো থেকে ৬৯৪ ডলার/টন এবং লেবানন থেকে ৬৮৮ ডলার/টন মূল্যে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। একই মূল্যে বাল্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনালকে মরক্কো ও লেবানন থেকে ৬০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানির কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ ধরনের অনিয়ম নজিরবিহীন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, যিনি মন্ত্রণালয়ের কাজে সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের উপর নির্ভর করেন। মন্ত্রণালয় ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, উপদেষ্টার অগোচরে এই অপকর্ম সংঘটিত হয়েছে। ইউটিউবার জুলকারনাইনের অভিযোগ দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও সরকারি তহবিলের স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। এই ঘটনায় সরকারের দুর্নীতি বিরোধী প্রচেষ্টা এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে। তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।