বাংলাদেশ ‘মবতন্ত্র’, সহিংসতা শুধু মব নয় – রাজনৈতিক ও ধর্মীয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত

সজীব ওয়াজেদ জয়

১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

সাম্প্রতিক এক ফেসবুক পোস্টে সজীব ওয়াজেদ জয় তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশ আজ ‘মবতন্ত্রে’ পরিণত হয়েছে, যেখানে পরিকল্পিত রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে আড়াল করতে ‘মব অ্যাটাক’ শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে। তার মতে, এটি সরকারের একটি কৌশল, যার মাধ্যমে তারা নৃশংস সহিংসতার দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘর ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা। সজীব ওয়াজেদ দাবি করেন, এটি কোনো স্বতঃস্ফূর্ত মব-সহিংসতা ছিল না, বরং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীগুলোর সমন্বিত আক্রমণ। হামলাকারীরা লাইভস্ট্রিমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রচার করেছে, অথচ পুলিশ ও সেনারা দাঁড়িয়ে থেকেছে দর্শকের মতো। তার মতে, একইভাবে ২০২৪ সালের আগস্ট ও অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্ট অবরোধের ঘটনাও ছিল পরিকল্পিত রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি। এনসিপি মুভমেন্ট ও বিএনপি-জামায়াত ঘনিষ্ঠ আইনজীবীরা এই কর্মসূচি সাজিয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় পার্টির অফিসে হামলার ঘটনাও সজীব ওয়াজেদ রাজনৈতিক সহিংসতার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন। গণঅধিকার পরিষদের কর্মী-সমর্থকেরা এসব হামলায় জড়িত ছিল বলে তিনি দাবি করেন। এছাড়া, ইউনুস সরকারের আমলে সুফি মাজার ও দরবার শরীফে হামলার কথাও তিনি তুলে ধরেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, এগুলো হঠাৎ উত্তেজিত ভিড়ের কাজ নয়, বরং ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর পরিকল্পিত আক্রমণ, যার মাধ্যমে সুফি ঐতিহ্যকে টার্গেট করা হয়েছে। সজীব ওয়াজেদ অভিযোগ করেন, এসব ঘটনায় সরকার কোনো দায় নেয়নি, বরং রাজনৈতিকভাবে সহিংসতাকে বৈধতা দিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ইউনুস নিজেই এ ধরনের হামলাকে “বিপ্লবী চেতনা” বলে অভিহিত করেছেন এবং তার প্রেস অফিস ‘মব’ শব্দটিকে “প্রেসার গ্রুপ” হিসেবে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। তার মতে, সংগঠিত রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সহিংসতাকে মব-সহিংসতা বলে চালানো তিনটি কারণে বিপজ্জনক— এটি সরকারের দায় এড়ানোর পথ তৈরি করে, ভুক্তভোগীদের অভিযোগকে অবমূল্যায়ন করে এবং পরিকল্পিত সহিংসতাকে দায়মুক্ত রাখে। শেষ পর্যন্ত তিনি সতর্ক করেন, মিডিয়া যেন সংগঠিত রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সহিংসতাকে সাধারণ মব-সহিংসতা হিসেবে না উপস্থাপন করে, কারণ বাস্তবে এগুলো অনেক বেশি ভয়ঙ্কর, পূর্বপরিকল্পিত ও কৌশলগতভাবে পরিচালিত।