স্বর্ণ উদ্ধারের নামে থানায় যুবককে মারধর, দু’একদিনের মধ্যেই পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন

২৫ মার্চ, ২০২৩ | ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

স্বর্ণ উদ্ধারের নামে সাটুরিয়া থানায় তদন্ত কর্মকর্তার কক্ষে বিদেশফেরত এক যুবককে মারধরের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত এএসআই তারিক আজিজকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি দু্‌’একদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানা গেছে। মারধরের পর স্বর্ণের দাবিদার পক্ষ ও ওই যুবকের মধ্যে ১২ টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। উভয়পক্ষ লিখিত দিয়েছে যে তারা এ বিষয়ে কোনো মামলা করবে না। সাটুরিয়া থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাস জানান, তিনি থানায় যোগদানের কয়েকদিন পর ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট ঢাকার নবাবগঞ্জের বাসিন্দা শিউলি আক্তার তাঁর ৩৯ ভরি স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এতে সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি গ্রামের ইয়ার আলীর ছেলে বিদেশফেরত নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে আত্মতাতের অভিযোগ করা হয়। পরে নাজমুলের বাবাও থানায় এসে অভিযোগ করেন তাঁর ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না। সাটুরিয়া থানার ওসি আরও বলেন, শিউলি তাঁর জিডিতে উল্লেখ করেছিলেন, তার ফুফাতো ভাই সুলতান মিয়া দুবাই থাকেন। সেখান থেকে নাজমুলের কাছে এ স্বর্ণ পাঠিয়েছিলেন। নাজমুল সেগুলো না দিয়ে আত্মসাৎ করে পলাতক রয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় তৎকালীন ওসি (তদন্ত) মহব্বত আলীকে। পরে তাঁকে কিশোরগঞ্জে বদলি করা হয়। তাঁর দাবি, থানায় মারধরের ঘটনা তিনি জানতেন না। একটি বেসরকারি টেলিভিশনে কয়েক দিন আগে মারধরের ভিডিও প্রচার হওয়ার পর তিনি তা দেখেছেন। তিনি আরও জানান, নাজমুলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি, তাকে স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধি এবং স্বর্ণের দাবিদাররা থানায় নিয়ে এসেছিলেন। এর পর স্থানীয় তিল্লি ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান, বেশ কিছু সাংবাদিকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা নাজমুল ও শিউলির মধ্যে মিটমাট করে দেন। ভিডিওতে দেখা যায়, থানার পরিদর্শকের কক্ষে টেবিলের সামনে কাঁচুমাঁচু হয়ে আছেন এক যুবক। পাশে দাঁড়ানো কোমরে পিস্তল গোজা এক পুলিশ সদস্য। পরিদর্শকের চেয়ারে বসা এক ব্যক্তি ওই যুবককে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। হঠাৎ যুবককে কষে চড় মারেন পুলিশ সদস্য। পরিদর্শকের চেয়ার থেকে ওই ব্যক্তি উঠে এসে যুবককে মারধর শুরু করেন। যুবক মেঝেতে পড়ে গেলে পা দিয়ে তার মাথা চেপে ধরে লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন ওই ব্যক্তি। মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন সরকার জানান, একটি বেসরকারি (বাংলাভিশন) টেলিভিশনে সাটুরিয়া থানায় একজনকে মারধরের সংবাদ প্রচারিত হলে এক সপ্তাহ আগে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান তাঁকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। সংবাদ প্রচারের পর পরই অভিযুক্ত এএসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করে মানিকগঞ্জ পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই তিনি অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। দু’একদিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পুলিশ সুপারের কাছে জমা দেওয়া হবে। অভিযুক্ত তারিক আজিজের মুঠোফোনে বারবার কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।