‘অবৈধভাবে দেশ দখলকারীরা এখন আমাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করছে’: কক্সবাজারের আন্দোলনকারীরা

৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৮:৫৩ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

কক্সবাজারে বাঁকখালী নদীর জায়গা উদ্ধারে জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের বিক্ষোভে অচল হয়ে পড়ে শহর। আজ ৫ই সেপ্টেম্বর, শুক্রবার সকালে কয়েক হাজার মানুষ বিমানবন্দর সড়কের গুমগাছতলায় জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করে। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় তীব্রভাবে রুখে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষ। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রশাসনের উদ্দেশে গালাগাল দেন। ঝাড়ু হাতে রাস্তায় নামা গৃহবধূ মোসলেমা খাতুন বলেন, অবৈধভাবে দেশ দখল করেছে যারা, তারা এখন আমাদেরকে উচ্ছেদ করছে। প্রাণ থাকতে এক ইঞ্চি জায়গাও ছাড়ব না। তুলতে হলে আমাদেরকে ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। তার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। অভিযান শুরুর পর ভাঙচুর করা হয় উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবহৃত একটি এক্সক্যাভেটর। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিত কর্মকর্তাদের ঘিরে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের অভিযোগ, নদী উদ্ধারের নামে জমির কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও বৈধ মালিকদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। নুনিয়ার ছড়ার স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী বলেন, “নদীর জন্য জায়গা ছাড়তে রাজি আছি, কিন্তু নিয়ম-আইন না মেনে গণউচ্ছেদ করা হচ্ছে। জীবন দেব, তবু ঘর ছাড়ব না।” পরিস্থিতি শান্ত করতে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা লুৎফুর রহমান কাজল। তিনি বলেন, “হাইকোর্টের রায় আমরা মানি, কিন্তু প্রশাসন আগে নদীর সীমানা নির্ধারণ করুক। পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে।” অভিযান শুরুর পর থেকে পাঁচ দিনে চার শতাধিক কাঁচা-পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ এবং অন্তত ৫৮ একর জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। তবে এরই মধ্যে উচ্ছেদবিরোধী আন্দোলনে একাধিকবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও মামলার ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যে দু’টি মামলায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ২৪শে আগস্ট হাইকোর্ট বাঁকখালী নদীর সীমানায় থাকা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে চার মাসের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১লা সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করে প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ।