অবরোধে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল চলাচল বন্ধ

১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৬:১০ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদ ও ছয়দফা দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর ফলে ঢাকা- ময়মনসিংহ রুটে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ন রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় রেললাইনে বসে ছয় দফা দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর আগে, ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের হামলা এবং ক্যাম্পাস ও হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কে. আর মার্কেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শিবলী সাদী জানান, বাকৃবি ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা এসে শিক্ষার্থীদের ওপর যে ন্যক্কারজনক হামলা করেছে, আমরা তার নিন্দা জানাই এবং বিচার চাই। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে ক্যাম্পাস ও হল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। ছয় দফা বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। জানা যায়, পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে রোববার জরুরি ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পশুপালন, ভেটেরিনারি ও কম্বাইন্ড— এই তিনটি ডিগ্রি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে তা মেনে নেননি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে তালা দেন আন্দোলনকারীরা। এতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে. ফজলুল হক ভূঁইয়াসহ সভায় উপস্থিত বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকরা ভেতরে আবদ্ধ হয়ে পড়েন। ৪ ঘণ্টা ধরে তালাবদ্ধ হয়ে থাকেন উপাচার্যসহ শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের শিক্ষক অংশ নেন। সভা শেষে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, আগামী সেশন থেকে কম্বাইন্ড কোর্সে ১৫০ শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। এরই মধ্যে যারা ভর্তি হয়েছেন, তাদের জন্য অপশন থাকবে— তারা চাইলে ভেটেরিনারি, পশুপালন বা কম্বাইন্ড যে কোনো একটি ডিগ্রি নিতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী দুই অনুষদ একীভূত করা সম্ভব নয়; তবে দুই অনুষদ মিলিতভাবে কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রদান করবে এবং পালাক্রমে দুই অনুষদ থেকেই ডিন নির্বাচিত হবেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান সরকার জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ লক্ষ্যে ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ককে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে কম্বাইন্ড কোর্সের জন্য নতুন কারিকুলাম তৈরি করবেন। মেকআপ কোর্সের কারিকুলামও প্রস্তুত করা হবে। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তিনটি ডিগ্রি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত মানতে রাজি নন। তারা এক পেশায় এক ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘সকালে আমরা আমতলায় অবস্থান করি। পরে দুপুরে শিক্ষকরা আমাদের জানালেন যে তিনটি ডিগ্রিই বহাল থাকবে। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল কেবল একটি ডিগ্রি— আর সেটি হলো কম্বাইন্ড ডিগ্রি। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’