জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

২৭ আগস্ট, ২০২৫ | ৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের আজকের এদিনে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এ উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের সময় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান মুক্তিকামী মানুষকে সাহস ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে এবং উজ্জীবিত করেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কবি নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, ‘৯০-এর গণআন্দোলন ও ‘২৪-এর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সময় তার কবিতা ও গান এদেশের মুক্তিকামী মানুষকে সাহস ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে, উজ্জীবিত করেছে। যুগযুগ ধরে অধিকারহারা মানুষকে সাহসী প্রতিবাদে উদীপ্ত করবে তার সাহিত্যকর্ম। কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসাবে সমধিক পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সাহিত্য ও সংগীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসংলগ্ন কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে। নজরুলের সৃষ্টিকর্ম প্রসঙ্গে নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম লিখেছেন, নজরুল ইতিহাস ও সময় সচেতন মানুষ ছিলেন। যার প্রভাব তার লেখায় স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়। তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব আর ভারতবর্ষে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের তরঙ্গকে নজরুল তার সাহিত্যে বিপুলভাবে ধারণ করেছেন। সে সময়ে ধর্মান্ধ মুসলমানদের তিনি পুনর্জাগরণের ডাক দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল একজন বলিষ্ঠ নেতার মতো। কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং গেল বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার লেখনী জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। জাতীয় কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বুধবার কবির স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায় নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ বুধবার কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা কেন্দ্রের উদ্যোগে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, হামদ-নাত পরিবেশনা, আবৃত্তি অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। নজরুল ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা কেন্দ্র আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসাবে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছারের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এসব আয়োজনে স্থানীয় শিল্পীরা হামদ-নাত এবং ইনস্টিটিউটের আবৃত্তি বিভাগের প্রশিক্ষণার্থীরা আবৃত্তি পরিবেশন করবেন।