শুল্ক ইস্যুতে বিশ্ববাজারে বাড়ল সোনার দাম

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের চাপ এখন সোনার বাজারেও পড়েছে। এখন এক কেজি সোনার বারও এর আওতায় এসেছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে এই ওজনের সোনার বার রপ্তানির ওপর প্রভাব ফেলবে। এক কেজি ওজনের সোনার বারে যুক্তরাষ্ট্র ৩৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় বিশ্ববাজারে দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪০০ ডলারেরও বেশি, যা এক দিন আগেও ছিল ৩ হাজার ৩৭২ ডলার। শুক্রবার (৮ আগস্ট) গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের ৭০ শতাংশ অপরিশোধিত সোনা প্রক্রিয়াকরণকারী দেশ সুইজারল্যান্ড। এখানকার ভ্যালকাম্বি, প্যাম্প, মেটালের মতো বড় বড় রিফাইনারিরা সোনা সরবরাহ করে থাকে আন্তর্জাতিক বাজারে। যুক্তরাষ্ট্রে এক বছরে সুইস সোনা রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। নতুন শুল্কে তার দুই-পঞ্চমাংশই এখন পড়ছে শুল্কের আওতায়। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সোনা বাজারে এই শুল্কের প্রভাব ততটা পড়বে না বলে জানিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউইয়র্কে যেসব ব্যবসায়ী এক কেজি সোনার বার নিয়ে কাজ করেন, তারা এখন আগেভাগে ডেলিভারির জন্য আক্রমণাত্মকভাবে অর্ডার দিচ্ছেন। এর ফলে বাজারে চাহিদা বেড়ে গিয়েছে এবং দাম ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। সেঞ্চুরি ফিন্যান্সিয়ালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক আরুন জন বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীরা এখনো সুইজারল্যান্ড থেকে শুল্ক ছাড়াই সোনা আমদানি করতে পারছেন। সোনার আন্তর্জাতিক দামের প্রভাবে দুবাইয়ের বাজারেও দর উঁচুতে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ২২ ক্যারেট সোনার দাম উঠেছে ৩৭৮ দশমিক ৭৫ দিরহাম প্রতি গ্রামে, যা ২১ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ (তখন ছিল ৩৮০ দিরহাম)। শিগগিরই তা ৩৮০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। একজন দুবাইভিত্তিক সোনা ব্যবসায়ী বলেন, ‘এই মুহূর্তে কিছুই করার নেই। দাম কমার কোনো ইঙ্গিত নেই। আমাদের একমাত্র আশা সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্রুত একটি বাণিজ্য চুক্তি হোক। তাহলেই স্বর্ণের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এবং দাম স্থিতিশীল থাকবে।’ এদিকে সর্বশেষ সমন্বয়ের পর দেশের বাজারে কমেছে স্বর্ণের দাম। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানিয়েছে, বুধবার (৬ আগস্ট) সবশেষ সমন্বয় করা দামেই দেশের বাজারে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে ভরিপ্রতি সোনার দাম ১ হাজার ৫৭৪ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত জানায় বাজুস। সে অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনা এখন বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকায়। ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৪০ হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতি ১ লাখ ১৬ হাজার ১২৭ টাকা।