সংক্ষিপ্ত ইউনুসনামা

৬ আগস্ট, ২০২৫ | ৭:৩০ পূর্বাহ্ণ
আলি শরিয়তি উবাচ , ডোনেট বাংলাদেশ

সোনার বাংলায় আজ শ্মশানের আতঙ্ক। ঘর থেকে বেরিয়ে অক্ষত ফেরার আশা নাই। পায়ে পায়ে মৃত্যু ওঁৎ পেতে আছে জনপদে জনপদে। মহানগর থেকে গ্রাম- সর্বত্র এক হিমধরা ভয় গ্রাস করেছে বাংলাদেশকে। এক বছর আগেও যে দেশকে বিশ্ববাসী প্রবৃদ্ধির বিস্ময় হিসেবে সমীহের চোখে দেখত, মাত্র নয় মাসের ধ্বংসযজ্ঞে দখলদার ড. ইউনূস সেই দেশকে আফগানিস্তান, ইরাকের গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছেন। কল্পনার ম্যাজিকের যে মরীচিকার পেছনে দেশের তরুণ, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের তিনি চালিত করেছেন তাদের চোখে আর স্বপ্ন নেই। কিন্তু কেন? পরাশক্তিগুলোর স্বার্থের বলি হতে চলেছে বাংলাদেশ। বিদেশি শক্তির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি, দেশীয় ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এবং ভূ-রাজনীতির আড়ালে নিজের দেশকে বিকিয়ে দিতে তৎপর গোষ্ঠীর ‘মেটিকুলাস ডিজাইনের’ স্বরূপ আজ উন্মোচিত হয়েছে। একনজরে গত এক বছরের ইউনূস গংয়ের খতিয়ান- • এই সরকারের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। • দেশের পেশাজীবীরা বিভ্রান্ত, সরকারী কর্মচারীরা মবসন্ত্রাসের শিকার। • দ্রবমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কিন্তু কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে আত্মহত্যা করছে। • দেশের অর্থনীতির স্থবির। দেশি বিদেশি বিনিয়োগ নেই। থেমে গেছে উন্নয়ন কার্যক্রম। • দেশে ঘুষ-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও দখল বৃদ্ধি পেয়েছে। • সরকারের আস্থাভাজনেরা বিদেশে টাকা পাচার করছে। • বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শিল্প-কলকারখানা। লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে যাচ্ছে। • অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রায় ২৭ লক্ষ মানুষ দরিদ্র হয়ে গেছে। • জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার গত অর্থবছরের চেয়ে কমে ৩.৯৭ শতাংশ হয়েছে। • তৈরি পোশাক খাতের ৪৫% (১৫২৫টি) কারখানা বন্ধ। এতে প্রায় ২৩ লাখ শ্রমিক বেকার হয়েছে, এরমধ্যে প্রায় ১৩ লাখ নারী। • শেয়ার মার্কেটঃ গত আট মাসে (১১ মে) দেশের শেয়ারবাজার থেকে ১০০০ পয়েন্টের বেশি সূচক পতনের মধ্য দিয়ে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে। তলানিতে দেশের শেয়ারবাজার। • ২১জন শীর্ষ ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। প্রায় ২৭০ জন ব্যবসায়ীর পাসপোর্ট বাতিল বা বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ৩০০ জনের মতো ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব স্থগিত বা বন্ধ রাখা হয়েছে। • ২০২৫ সালের ঈদুল আজহায় দেশজুড়ে ৯১ লাখ ৩৬,৭৩৪টি পশু কোরবানি হয়েছে। ২০২৪ সালে যা ছিল ১ কোটি ৪ লাখ ৮, ৯১৮টি। প্রায় ১৩ লাখ কমেছে। ২০২৫ সালের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছে, যা ২০২৪ সালের চেয়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা কম। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিঃ • জুলাই আন্দোলনকারীদের সকল অপরাধের বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে। • • দেশের আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি। হত্যা, লুটপাট, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ, অপহরণে জনজীবন বিপর্যস্ত। • মবসন্ত্রাসের মাধ্যমে ২২৩ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। যার মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সংখ্যা সর্বাধিক। নারীঃ • নারীদের জন্য দেশ এখন নিরাপদ নয়। থেমে গেছে নারীর অদম্য অগ্রযাত্রা। নারীরা গণধর্ষণ সহ বিভিন্ন ধরনের নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। • ইউনূসের শাসনামলের দশ মাসে প্রায় ১৮ লাখ নারী চাকরী হারিয়ে দরিদ্র হয়েছে। • ৪৭৬ জন ধর্ষণের শিকার, ধর্ষণের পরে ২৯ জন হত্যার শিকার, ধর্ষণের পরে ৪ জন আত্মহত্যা করেন, ১৮২ জন নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষাখাতঃ • পাঠ্যপুস্তক কেলেঙ্কারীঃ ৩৫৫ কোটি টাকা লুটপাট। নিম্নমানের বইছাপা। বছরের অর্ধেক সময় চলে গেলেও ছাত্রদের হাতে বৈ পৌঁছেনি। • বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৭৪ জন ছাত্রকে বহিস্কার, ২১২০ জন ক্যাম্পাসে যেতে পারছে না। মেডিক্যালের ৩১৩ জন, প্রকৌশলের ১২৩ জন বহিস্কার হয়েছে। • সরকারী কলেজসমূহে ১ লাখ ৩০,৬০০ জন শিক্ষার্থী মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এরমধ্যে প্রায় ১৯,৫৯০ জন শিক্ষার্থী মবের শিকার হয়ে আহত হয়েছে, অন্তত ৫২,২৪০ জন শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। • বেসরকারী কলেজসমূহের প্রায় ২,০০,৩৫০ জন শিক্ষার্থী মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। প্রায় ৪০,১৪০ জন শিক্ষার্থী মবের শিকার হয়ে আহত হয়েছে এবং প্রায় ১ লাখ ২০,২১০ জন শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। • পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রায় ৩০০০ শিক্ষার্থী মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। • ৪৬টি স্বায়ত্বশাসিত ও সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষদের জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। ১০৬টির মতো বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষদের জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা চলমান আছে। • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ও ১৯ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। • এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২০২৪ সালের চেয়ে ৮১ হাজার ৮৮২ জন কমেছে। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার (প্রায় ২৭% ) জন পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেননি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে রেজিস্ট্রেশন করা প্রায় ৩৯% শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেননি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে (ভোকেশনালে) রেজিস্ট্রেশনকৃত শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেননি প্রায় ৪০ শতাংশ। • শিক্ষাঙ্গনে চলছে চরম নৈরাজ্য। পড়াশোনা ছাড়া অন্য সকল কাজে ছাত্রদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। অটোপাসের মাধ্যমে প্রজন্মকে শিক্ষাবিমূখ করা হচ্ছে। মবসন্ত্রাসের মাধ্যমে শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। মাদকের বিস্তারে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাদের আগামীর ভবিষ্যত। সংস্কৃতিঃ • পরিকল্পিতভাবে আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির উপর আঘাত হানা হচ্ছে। সারাদেশে ১৫০০ এর বেশি ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভাংচুর করা হয়। • সংস্কৃতি কর্মী ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উপরে অন্তত ৬৩টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। • দেশজুড়ে ২২টি শিল্পকলা একাডেমিতে হামলা হয়েছে। • উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর বাধায় সারাদেশে ৩২১টি বাউল অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। • দেশের ১০৭টির বেশি মাজার, সুফি দরগায় আক্রমণ, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বাহিনী • সরকারী ভাষ্যে ৪৪জন পুলিশকে হত্যার কথা জানানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। ৬ জন পুলিশ সদস্যের অস্বাভাবিক মৃত্যু। • ৬৩৭ জন পুলিশের অঙ্গহানি, ৩ হাজারের বেশি মারাত্মক আহত হয়েছে। ৪৬০টি থানা এবং ৯৯টি পুলিশ ফাঁড়ি, তদন্ত কেন্দ্র, ট্রাফিক বক্স অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করেছে। ৫ হাজার ৮২৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬ লাখ ৫১ হাজার গোলাবারুদ লুট করেছে। ১০৭৪টি পুলিশের ১০৭৪টি যানবাহন পুড়িয়েছে। পুলিশের উপর ৪০০টির বেশি মবসন্ত্রাস চালানো হয়েছে। • ৫৩ জন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১০৫৯ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। • পুলিশের ৩১ জন ও র‍্যাবের ২৯ জনের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা • ৫৯ জন চাকরিচ্যুত ও বাধ্যতামূলক অবসর, ৮২ জন ওএসডি। ২৯জন অফিসার সাময়িক বরখাতস। ৯২৭ জন চাকরিতে যোগদান করেনি, অর্থাৎ তারা নিখোঁজ। • ১৬ জন অফিসারের অফিসার্স ক্লাবের সদস্যপদ বাতিল। ১০৩ জনের পিপিএম ও বিপিএম পদক বাতিল। ধর্মীয় সংখ্যালঘুঃ • সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করেছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে ২০২৪ সালের আগস্টের ৪ তারিখ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২১৮৪টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ৯ জনকে হত্যা, ৪জন নারীকে ধর্ষণ, ৩৮জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। ৬৯টি উপাসনালয়, ৯১৫ জনের বাড়িঘর ও ৯৫৩ জনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়েছে। ২১ জনের বসতভিটা দখল করা হয়েছে। জঙ্গি ও মৌলবাদঃ • বিরুদ্ধ মতকে দমনের জন্য জঙ্গি গোষ্ঠীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে সরকার। ৫ আগস্টের পরে ৩১২ জন স্বীকৃত ও দণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিকে জামিনে মুক্তি দিয়েছে। তাছাড়া ৭০ জন জঙ্গি কারাগার ভেঙ্গে পালিয়েছে। মোট ৩৮২ জন কারাগারের বাইরে। জঙ্গির সংজ্ঞা বদলে ‘নাশকতাকারী’ করা হয়েছে। রাজনৈতিক কার্যক্রমঃ • আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন দলের সকল কার্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছে। নেতাকর্মীদের বাড়ি, অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে। • সরকারের মদদে দেশজুড়ে চলছে মবসন্ত্রাস। গত এক বছরে মব ভায়োলেন্সে ২২৩ জন মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে, যার অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। • প্রায় ২৩৩৭টি মিথ্যা দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে হত্যা মামলা প্রায় ১,৮০০টি এবং হত্যা চেষ্টা মামলা ৫৪৫টি। এসব মামলায় এজাহারনামীয় আসামী প্রায় ৩ লাখ ১২০০ জন, অজ্ঞাতনামা আসামি প্রায় ৭ লাখ ৪০,০০০ জন, অর্থাৎ মোট প্রায় ১১ লাখ আসামি। • বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নামে ৪৪০টি মামলা করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৯৭টি হত্যা মামলা, ১২৬টি হত্যাচেষ্টা মামলা এবং ১৭টি অন্যান্য ধারার মামলা। • ইতোমধ্যে প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতারের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে ১২০ জনের অধিক সাবেক এমপি, মন্ত্রী ও উপদেষ্টা রয়েছেন। এছাড়াও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য সহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত তৃণমূলের নেতাকর্মী রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৮০ হাজার নেতাকর্মী কারাগারে আছে। • আওয়ামী লীগের প্রায় ৩১৩ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ৫ আগস্ট যশোরে আওয়ামী লীগ নেতার আবাসিক হোটেলে অগ্নিসংযোগ করে ২৪ জনকে এবং ২৫ আগস্ট গাজী অটো টায়ার কারখানায় আগুন দিয়ে ১৮২ জনকে, মোট ২০৬ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। • জেলখানায় আওয়ামী লীগের ২৭ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য দলে আরও ২৪ জন কারাগারে হত্যার শিকার হয়েছে। • আওয়ামী লীগের প্রায় ১১ হাজারের বেশি দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়েছে। • প্রায় ৩ লাখ নেতাকর্মীর বাড়িঘর, ব্যক্তিগত অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়েছে। • প্রায় ৭০ লাখের বেশি নেতাকর্মী বাসা-বাড়িতে থাকতে না পেরে, আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হয়েছে। আইন ও বিচার বিভাগঃ • বিচার বিভাগের নগ্ন হস্তক্ষেপঃ প্রধান বিচারপতি সহ ৭ জন বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করা। হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা। অ্যাটর্নি জেনারেল সহ সারাদেশের সকল আইন কর্মকর্তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা। হাইকোর্ট বিভাগে ২৩ জনকে অবৈধভাবে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি দখল। • আদালত প্রাঙ্গনে নৈরাজ্য চলছে। আওয়ামী লীগের গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের উপর এবং আইনজীবীদের উপরও হামলা করা হচ্ছে। • আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালকে ব্যবহার করে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বদলা নিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাসহ নেতাকর্মীদের ফাঁসি দিতে গণহারে মিথ্যা মামলা রুজু করা হচ্ছে। গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতাঃ • ৫ আগস্টের আগে ও পরে মিলিয়ে ১০জন সাংবাদিক হত্যার শিকার এবং ৪ শতাধিক সাংবাদিক বিভিন্ন আক্রমণে আহত হয়েছে। • মিডিয়া দখলের মতো নজিরবিহীন ঘটনাও বাংলাদেশ ঘটছে। মব সৃষ্টি করে ১১৮ জন সাংবাদিককে হেনস্থা করা হয়েছে। • ৪১ জন সাংবাদিক গ্রেফতার হয়েছে, ৪৩২ জনের নামে হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা করা হয়েছে। • ঢাকাসহ সারাদেশের সহস্রাধিক সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, ১৬৮ জনের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে। • জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ সারাদেশের প্রেসক্লাব থেকে ১০১ জনকে বহিস্কার ও সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। • অন্তত ৭৩ জন সাংবাদিকের দুদকে তদন্ত চলমান, শতাধিক সাঙ্গাব্দিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে, তিন শতাধিক সাংবাদিকের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। • অগণিত সাংবাদিককে পত্রিকায় কলাম লেখা ও টিভি টকশোতে অংশগ্রহণে বাধা দেয়া হচ্ছে। বেসামরিক প্রশাসনঃ • সিভিল সার্ভিসের ২১ জন সাবেক ও বর্তমান সিনিয়র অফিসারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৫৯ জন সাবেক ও বর্তমান সিনিয়র অফিসারের নামে মামলা করা হয়েছে। • ৩৯ জনকে বাধ্যতামূলক অবসর। ৯৬ জনের অফিসার্স ক্লাবের সদস্যপদ বাতিল। ৬৭ জন ওএসডি। • ১০২ জনের পাসপোর্ট বাতিল ও বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা। • অন্যায়ভাবে ১১৯ জনকে ভূতাপেক্ষ সচিব, ৪১ জনকে গ্রেড-১, ৫২৮ জনকে অতিরিক্ত সচিব, ৭২ জনকে যুগ্মসচিব এবং ৪ জনকে উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দিয়েছে। • রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১৮ জন প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। • ৭১ জন চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছে। সামরিক বাহিনীঃ • ১০ জন সামরিক অফিসার গ্রেফতার। ৫১ জন বিভিন্ন মামলার আসামী। • ৪০ জন সামরিক অফিসারকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর, অকালীন অবসর ও বরখাস্ত করা হয়েছে। • ১৮ জন সার্ভিং অফিসার সহ ৪০ জন সামরিক বাহিনীর অফিসারের পাসপোর্ট বাতিল ও বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণঃ ১) নিজের মামলাগুলো ‘অদৃশ্য হাতে’ খারিজ করা। যেখানে অর্থপাচার, শ্রম আইন লঙ্ঘনসহ একাধিক মামলা বিচারাধীন ছিল। ২) ৬৬৬ কোটি টাকার কর ‘মওকুফ’। ৩) গ্রামীণ ব্যাংকের আগামী ৫ বছরের কর মওকুফ। ৪) গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা ২৫% থেকে ১০% কমিয়ে আনা। ৫) গ্রামীণ ইউনিভার্সিটির অনুমোদন। ৬) জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসা করতে ‘গ্রামীণ এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস এর অনুমোদন। ৭) গ্রামীণ টেলিকম নিয়েছে ডিজিটাল ওয়ালেটের অনুমোদন। ৮) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৭০০ কোটি টাকার সামাজিক নিরাপত্তা তহবিল গ্রামীণ ট্রাস্টে হস্তান্তর। রাষ্ট্র পরিচালনায় বিদেশি ও দ্বৈতনাগরিকঃ • ইউনূস সরকারের নীতি-নির্ধারকদের বেশিরভাগই বাংলাদেশের নাগরিক নন। সরকার বিদেশি পরাশক্তির ইচ্ছাপূরণে মানবিক করিডোর, চট্টগ্রাম বন্দর তাদের হাতে তুলে দিয়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিতে চায়। বাংলাদেশকে বিদেশিদের ছায়া-যুদ্ধের ক্ষেত্রে পরিণত করতে চায়। • অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শেখ বশিরউদ্দীন, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী মোহাম্মদ সুফিউর রহমান, প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব, প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সংক্ষেপে বিডা’র চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী (চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন), সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সমন্বয়ক ড. আলী রীয়াজ, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মোশতাক হুসেন খান, সিনিয়র সচিবের পদমর্যাদায় এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার ঐকমত্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সিনিয়র সচিব মর্যাদায় মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম মুশফিকুল ফজল আনসারী, প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব (পিএস) শাজিব এম খায়রুল ইসলাম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম মমতাজ আহমেদ প্রমুখ। অন্যান্যঃ চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের কাছে ইজারা, রাখাইনে তথাকথিত মানবিক করিডোর দেওয়া। দেশের অভ্যন্তরে আইএসআই-এর তৎপরতা বৃদ্ধি। স্বাধীনতা বিরোধীদের আস্ফালন। দেশে আজ কেউ নিরাপদ নয়, শান্তিতে নেই মানুষ। মানবাধিকার বলতে কিছু অবশিষ্ট নেই। এ কোন বাংলাদেশ দেখছে আজ মানুষ? ভূলুন্ঠিত মৌলিক অধিকার। নির্বাসনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের মানুষের জীবন দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের বাংলাদেশের মানুষের কাছে এখন একটাই অপশন। আর সেটি হচ্ছে অশান্তির কারিগর মুহাম্মদ ইউনূসের প্রস্থান। ইউনূস হ্যাজ টু গো। দেশ বাঁচাতে, প্রাণ-প্রকৃতি ও মানুষ বাঁচাতে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। লড়াই করতে হবে জাতির পতাকা খামচে ধরা এই শকুনদের বিরুদ্ধে। এরবিকল্প নেই।