৩৬ জুলাই আবাসন প্রকল্পে ‘বালিশ কাণ্ডের’ চেয়েও অনেক বড় হরিলুটের গোমর ফাঁস!

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য গৃহীত ‘৩৬ জুলাই’ আবাসন প্রকল্পে ব্যয়ের অস্বাভাবিকতা নিয়ে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, প্রকল্পের বিভিন্ন উপাদানে প্রকৃত ব্যয়ের তুলনায় ৩ থেকে ৪৫ গুণ বেশি খরচ দেখানো হয়েছে, যা জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণে জানা গেছে, আরসিসি পিলারের প্রকৃত মূল্য ৯০০ টাকা হলেও তা ৪০,০০০ টাকায় দেখানো হয়েছে। এছাড়া, ২৫ লাখ টাকার লিফটের জন্য ৯২ লাখ টাকা, ১২ লাখ টাকার সাবস্টেশনের জন্য ৬৩ লাখ টাকা এবং ৯৫,০০০ টাকার পানির পাম্পের জন্য ৪ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। সীমানা প্রাচীর, বেড লিফট, সাবস্টেশন এবং পানির পাম্পের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৪৫ গুণ, ৪ গুণ, ৫ গুণ এবং প্রায় ৫ গুণ বেশি ব্যয় দেখানো হয়েছে। এই প্রকল্পটি অন্তর্বর্তী সরকারের সময় শুরু হলেও, ব্যয়ের এই অস্বাভাবিকতা নিয়ে বিভিন্ন কর্মকর্তারা একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। কেউ কেউ দাবি করেছেন, দ্রুত বাস্তবায়নের চাপে এমন ভুল হয়েছে। তবে, নিয়মিত যাচাই-বাছাই ছাড়াই এই ব্যয় অনুমোদনের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। প্রকল্পের প্রস্তাব আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে, ব্যয়ের এই অস্বাভাবিকতা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাাাধ্যমে এটিকে অনেকে বালিশ কান্ডের চেয়েও বড় দুর্নীতির প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গত ২রা জুন প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, নিহতদের পরিবার ও আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের অস্বাভাবিক ব্যয় শুধু প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে না, বরং নিহত ও আহতদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের এই উদ্যোগকেও বিতর্কিত করছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হলেও, দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।