বাড়ছে নদীর পানি, কয়েক জেলায় আবারও বন্যার শঙ্কা

নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে কয়েকটি নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। এতে দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি নদীতে আগামী তিন দিনের মধ্যে পানি সতর্কসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে দেশের নিম্নাঞ্চল বিশেষ করে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রামে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, বর্তমানে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, হালদা, গোমতী, ফেনী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী দুই দিন পর্যন্ত এসব নদীর অববাহিকায় ভারী থেকে অতি ভারী এবং তৃতীয় দিনে মাঝারি-ভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে আগামী তিন দিন পর্যন্ত এসব নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। ফেনী জেলার মুহুরী নদী আগামী দুই দিনের মধ্যে সতর্কসীমায় পৌঁছাতে পারে। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার উদয় রায়হান জানান, সাগরের সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের অনেক এলাকায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। এতে করে নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এর ফলে ফেনী জেলায় আবারও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলায়ও একই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এদিকে চট্টগ্রাম এলাকায় ভারী বৃষ্টির প্রভাবে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতি হতে পারে। বাড়ছে নদীর পানি, কয়েক জেলায় আবারও বন্যার শঙ্কা তিনি আরও বলেন, ‘টানা বৃষ্টি, নদীর পানি বৃদ্ধি এবং নিম্নচাপজনিত জলোচ্ছ্বাসের কারণে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় সাময়িক বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কা রয়েছে।’ এদিকে সিলেট বিভাগের কংস নদীর পানি বাড়ছে, যাদুকাটা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে এবং সারিগোয়াইন ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কিছুটা কমলেও বিপৎসীমার নিচেই রয়েছে। এ অববাহিকায় আগামী দুই দিন মাঝারি থেকে ভারী এবং তৃতীয় দিনে মাঝারি-ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিলেট জেলার সারিগোয়াইন, সুনামগঞ্জের যাদুকাটা ও নেত্রকোনার সোমেশ্বরী নদী সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানিও বাড়ছে এবং আগামী তিন দিন পর্যন্ত তা বৃদ্ধি পেতে পারে, যদিও বিপৎসীমার নিচেই থাকবে। তিস্তা নদীর পানি বর্তমানে কমছে। আগামী দুই দিন তা স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং তৃতীয় দিনে বাড়লেও বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হবে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে এবং তা দুই দিন স্থিতিশীল থেকে পরবর্তী তিন দিনে বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচেই থাকবে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানিও হ্রাস পাচ্ছে এবং আগামী পাঁচ দিন পর্যন্ত তা স্থিতিশীল থেকে বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হবে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ বর্তমানে ভারতের স্থলভাগে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে দেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি এবং নদীর তীরবর্তী এলাকায় এক থেকে তিন ফুট বেশি জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে।