আবর্জনায় ছেয়ে গেছে আমেরিকার বিভিন্ন শহর, বিপর্যস্ত নগরজীবন

২৭ জুলাই, ২০২৫ | ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপ আর তার সঙ্গে পচা গন্ধ, এ যেন আমেরিকার শহরজুড়ে এক নতুন দুর্ভোগের নাম। ডাস্টবিন উপচে পড়া আবর্জনা, বাতাসে মাছির ঝাঁক আর রাস্তাজুড়ে দুর্গন্ধ- এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে দেশব্যাপী চলমান একটি শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে। খবর বিবিসির। দেশটির অন্যতম বৃহৎ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ‘রিপাবলিক সার্ভিসেস’-এর কয়েক হাজার কর্মী তিন সপ্তাহ ধরে ধর্মঘটে রয়েছেন। কম বেতন ও সীমিত সুযোগ-সুবিধার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত পাঁচটি অঙ্গরাজ্যের একাধিক শহরে এ ধর্মঘট ছড়িয়ে পড়েছে। টিমস্টার্স ইউনিয়ন বলছে, রিপাবলিক সার্ভিসেস তাদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ন্যায্য আচরণ করছে না। তবে কোম্পানির পাল্টা অভিযোগ, ইউনিয়ন আলোচনার পরিবর্তে অচলাবস্থাকে উসকে দিচ্ছে। ম্যাসাচুসেটসের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ট্রাকচালক মাইক ওর্তিজ বলেন, ‘আমরা যে বেতন পাচ্ছি ততে চলা সম্ভব না। খরচ দিনকে দিন বাড়ছে।’ এই ধর্মঘটে দেশজুড়ে অন্তত দুই হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ বন্ধ রেখেছেন, যার প্রভাব পড়েছে লাখ লাখ নাগরিকের ওপর। গ্লস্টারসহ অন্তত ছয়টি শহর চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্যদিকে, রিপাবলিক শ্রমিক ইউনিয়নের বিরুদ্ধে গাড়ি চুরি, ভাঙচুর এবং হুমকির মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছে, যা ইউনিয়ন সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্জ্য সংকট দ্রুত মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে, যা ধর্মঘটরত শ্রমিকদের অবস্থানকে আরও জোরালো করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, ফিলাডেলফিয়ায় মাত্র আট দিনের মধ্যেই একটি স্যানিটেশন ধর্মঘট চুক্তিতে রূপ নেয়। ওয়াশিংটনের লেসি শহরে এক সপ্তাহ পর সমঝোতা হলেও, অনেক শহরে এখনো সমস্যা রয়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন কখনো নিজের কর্মী দিয়ে, কখনো নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করে আবর্জনা সরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু সেটাও সবখানে কার্যকর হচ্ছে না। বস্টনের মেয়র মিশেল উ কোম্পানিটিকে জরিমানা করার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এই ব্যর্থতা শহরের নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ বিপাকে পড়া শহরের বাসিন্দারা বলছেন, ময়লা সরানো না হলে বাড়ছে মশা, মাছি ও ইঁদুরের উপদ্রব। মালডেন শহরের এক কফিশপ মালিক গ্লেইসি স্যান্টোস বলেন, ‘সপ্তাহে একবার ময়লা না সরালে আমরা ব্যবসা চালাতেই পারি না।’ খবরে বলা হয়, সর্বশেষ শুক্রবারের আলোচনাও ফলপ্রসূ হয়নি এবং এখনো নতুন কোনো বৈঠকের দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়নি। ফলে আমেরিকার বহু শহরের নাগরিকদের জন্য এই ‘আবর্জনাময় গ্রীষ্ম’ কতদিন চলবে তা পরিষ্কার নয়।