স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা কি এবারই প্রথম?

সরাসরি স্কুল ভবন কিংবা তার আশপাশে বিমান দুর্ঘটনা বিশ্বে বিরল। তবে যে কয়েকটি ঘটেছে, তাতে প্রাণহানি কম নয়। এসব দুর্ঘটনার প্রায় অর্ধেক ক্ষেত্রেই সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হয়। বিভিন্ন বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যমের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় এর ইতিহাস। জাপান- ১৯৫৯ ১৯৫৯ সালের ৩০ জুন জাপানের কিশিকাওয়া শহরে একটি প্রাথমিক স্কুলের ওপর বিধ্বস্ত হয় মার্কিন বাহিনীর এফ-হানড্রেড সুপার সাবের যুদ্ধবিমান। এতে ১১ শিশুসহ ১৮ জন নিহত হয়। আহত হয় দেড় শতাধিক। রাশিয়া- ১৯৭২ ১৯৭২ সালের ১৬ মে রাশিয়ায়, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের স্ভেত/লোগরস্ক শহরে একটি কিন্ডারগার্টেনে বিধ্বস্ত হয় আন্তোনভ অ্যান-টোয়েন্টি ফোর বিমান। এতে ২৪ শিশু ও বিমানের বেশিরভাগ আরোহী নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্র- ১৯৮৬ ১৯৮৬ সালের ৩১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সেরিটোস শহরে মাঝ আকাশে যাত্রীবাহী ও ব্যক্তিগত ২টি বিমানের সংঘর্ষ হয়। এর ধ্বংসাবশেষ কয়েকটি বাড়ি ও স্কুলের খেলার মাঠে পড়ে। স্কুলটি বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা আহত হয়নি। তবে বিমানের যাত্রী ও মাটিতে থাকা ৮২ জন নিহত হয়। ইতালি- ১৯৯০ ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ইতালির বোলোগনা শহরের কাছে একটি স্কুলে বিধ্বস্ত হয় এমবি-থ্রি/টু/সিক্স সামরিক বিমান। বিমানটিতে আগুন ধরে যাওয়ায় পাইলট আগেই বেরিয়ে যান। এ ঘটনায় ১২ শিক্ষার্থী নিহত ও ৮৮ জন আহত হয়। যুক্তরাষ্ট্র- ২০০৭ ২০০৭ সালের ১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায় একটি হাইস্কুলের কাছে বিধ্বস্ত হয় বাণিজ্যিক বিমান। বৈরি আবহাওয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটে। পাকিস্তান- ২০১০ পাকিস্তানের পেশাওয়ারে একটি স্কুলের কাছে ছোট একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে ২ শিশুসহ ৫ জন নিহত হয়। কেনিয়া- ২০২৩ ২০২৩ সালে কেনিয়ার নাইরি কাউন্টিতে একটি প্রাইমারি স্কুল প্রাঙ্গণে আছড়ে পড়ে প্রশিক্ষণরত ছোট বিমান। স্কুল ভবনটির ব্যাপক ক্ষতি হলেও, কেউ উপস্থিত না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সামরিক বা প্রশিক্ষণ বিমানের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ সেগুলো কম উচ্চতায় ওড়ে। যদিও জনবহুল এলাকায় বিমান চলাচলে কঠোরতা এবং নিয়ন্ত্রণ ও রাডার প্রযুক্তির উন্নতির কারণে এমন দুর্ঘটনার হার কম। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতালা একটি ভবনে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই আকস্মিক দুর্ঘটনায় বৈমানিকসহ ৩১ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। আহত সকলকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারসহ অ্যাম্বুলেন্সের সহায়তায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এবং নিকটস্থ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্থানান্তর করা হয়। জানা যায়, স্কুলের ক্লাসরুমে ঢুকে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় প্রশিক্ষণ বিমানটি। সাথে সাথে আগুন ধরে যায় এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে বাড়তে থাকে হতাহতের সংখ্যা। পরে দেয়াল ও জানালা ভেঙে চালানো হয় উদ্ধার তৎপরতা।