জন্মাষ্টমী ও দুর্গাপূজার প্রস্তুতির আহ্বান পূজা পরিষদের

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উদ্দীপনায় প্রতি বছরের মতো এবারও সারা দেশে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী এবং শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্যাপনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির জন্য সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ। শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে পূজা পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভায় এই আহ্বান জানানো হয়। সন্ধ্যায় পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামী ১৬ আগস্ট শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী এবং আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে এ বছর শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হবে। ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হবে। পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধরের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা। এ ছাড়া দেশের বিরাজিত পরিস্থিতি এবং আসন্ন জন্মাষ্টমী ও শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতির নানা দিক নিয়ে বক্তব্য দেন আগত নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, কাজল দেবনাথ, জয়ন্ত সেন দীপু, মিলন কান্তি দত্ত, দ্বীপেন চ্যাটার্জী, মনীন্দ্র কুমার নাথ, জয়ন্ত কুমার দেব, অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সভায় গত বছরের জুলাই বিপ্লবে শহীদদের আত্মার সদগতি কামনা এবং আহতদের সুচিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে এসব হামলা-চাঁদাবাজির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এই পরিস্থিতির অবসানে অন্তর্বর্তী সরকার এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া বিরাজিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোয় এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয় যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধানসহ বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সম্পৃক্ত না করায় পূজা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রচণ্ড ক্ষোভ ব্যক্ত করা হয়। পরিষদ মনে করে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মনোভাব জানতে না চাওয়া এবং সংস্কার কার্যক্রম থেকে তাদের দূরে রাখা প্রধান উপদেষ্টার ‘বাংলাদেশকে এক পরিবার হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকারের’ সম্পূর্ণ পরিপন্থি। সভায় সারা দেশে পূজা উদ্যাপন পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে ‘ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ উল্লেখ করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তারদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। অন্যথায় আসন্ন ধর্মীয় উৎসবগুলোতে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়।