গত জুলাইয়ে জনতার পাশে দাঁড়ানো সেনার এই জুলাইয়ে গোপালগঞ্জে জনতার ওপর বর্বরতা, নির্বিচার গুলি-হত্যা

১৬ জুলাই, ২০২৫ | ৭:৩৭ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, যা মিডিয়ার লাইভ কভারেজে স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের বেশি গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, এবং পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে দীপ্ত নামে একজনের মৃত্যু নিশ্চিত হলেও বাকিদের পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। এই ঘটনা সেনাবাহিনীর প্রতিশ্রুতির সাথে সাংঘর্ষিক, যেখানে তারা গত জুলাই-আগস্টে দাবি করেছিল যে তারা দেশের জনগণের উপর গুলি চালাবে না। স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা শুরু হয়। এই কর্মসূচি কে সফল করতে সেনাবাহিনী এপিসি (আর্মড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) থেকে গুলি চালায়, যার ফলে এনসিপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সেনা সদস্যরা গুলিবিদ্ধ এক যুবককে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং তার গলায় বুট দিয়ে চেপে ধরছেন, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই ঘটনা স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলছেন, “গোপালগঞ্জের মানুষ কি বাংলাদেশের নাগরিক নয়? সেনাবাহিনী যদি জনগণের উপর গুলি চালাতে পারে, তাহলে তাদের ‘জনগণের পাশে থাকার’ প্রতিশ্রুতি কোথায়?” অনেকে অভিযোগ করেছেন, দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ যারা আওয়ামী লীগের সমর্থক, তাদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য না করার মানসিকতাই কি এই নির্মমতার কারণ? গত জুলাই আগস্ট এ ছাত্র আন্দোলনের সময় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রেসিডেন্ট ভলকার টুর্ক এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, তিনি বাংলাদেশ সেনবাহিনীকে নিষেধ করেছিলেন জনগনের উপরে গুলি চালাতে। তাহলে কি সেনাবাহিনী দেশের মানুষের কথা বিবেচনা না করে জাতিসংঘের নির্দেশ মতো চলে? জনমানুষের উপর সেনাবাহিনীর নির্মমতা থামাতে হলে কি জাতিসংঘ-কে আবার ফোন দিতে হবে? সামাজিক মাধ্যমে পোস্টে দাবি করা হয়েছে, গোপালগঞ্জে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, এবং পরিস্থিতি যেন “ভয় আর ষড়যন্ত্রের কারাগারে” পরিণত হয়েছে। এমনকি নারী ও শিশুদেরও গুলি থেকে রেহাই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে, এবং অনেকে এটিকে “রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড” হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। গোপালগঞ্জের এই ঘটনা দেশের আইনের শাসন, সংবিধান এবং মানবতার প্রতি প্রশ্ন তুলেছে। স্থানীয়রা দাবি করছেন, সেনাবাহিনীর এই নৃশংসতার জবাবদিহি করতে হবে। তারা বলছেন, “আমরা আমাদের হিসাব বুঝে নেব।” এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং দায়ীদের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছে।