দুই সন্তানসহ গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, দেবর পলাতক

১৫ জুলাই, ২০২৫ | ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

ময়মনসিংহের ভালুকায় দুই সন্তানসহ এক নারীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত গৃহবধূর স্বামী রফিকুল ইসলামের অভিযোগ, তার ছোট ভাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে রফিকুলে ছোট ভাই নজরুল ইসলাম পলাতক। সোমবার (১৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌর শহরের টিঅ্যান্ডটি রোডের একটি বাসা থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহতরা হলেন ময়না আক্তার (৩২), সাত বছর বয়সী মেয়ে রাইসা আক্তার ও দুই বছরের ছেলে নীরব হোসেন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দেড় মাস আগে টিঅ্যান্ডটি রোডের ওই বাসাটি ভাড়া নেন পোশাক শ্রমিক রফিকুল ইসলাম। স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন তিনি। রফিকুল কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের সেনের বাজার গ্রামের বাসিন্দা। ভাড়া নেওয়ার পর তার সঙ্গে দুই সন্তানসহ স্ত্রী ও ছোট ভাই নজরুল ইসলাম ওই বাসায় ওঠেন। রফিকুল ইসলাম জানান, কারখানায় রাতে ডিউটি শেষে সকাল ৯টার দিকে বাসার সামনে গিয়ে দেখেন বারান্দার গ্রিলের দরজায় তালা দেওয়া। স্ত্রীকে ডাকাডাকির পর সাড়া না পেয়ে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন তার স্ত্রী ও সন্তানদের রক্তাক্ত মরদেহ বিছানায় পড়ে আছে। রফিকুল ইসলামের বাসার পাশে ভাড়াটিয়া ছলমা জাহান জানান, তিনি স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানে রান্নার কাজ করেন। গতকাল রাতে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সন্দেহজনক কোনো শব্দ শুনতে পাননি তিনি। ছোট ভাই নজরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমার বউ-বাচ্চারে আমার ছোট ভাই খুন করছে। কিন্তু কী কারণে হত্যা করল বুঝতাছি না। ৪০ হাজার টাকা ঋণ করে ভাইকে জামিনে আনছিলাম। সে মার্ডার মামলায় জেল খাটছে।’ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নজরুল অটো চালাইয়া ৫-৬ হাজার ট্যাকা কামাইতো। একলা সংসারডা টানতে কষ্ট অইত, তাই কামাই বাড়াইতে তাগদা দিতাম। কিন্তু আমার সংসারটা সে একেবারে শেষ কইরা দিল। ভাইটারে আগলে রাখতে চাইছিলাম, সে-ই আমার সাজানো সংসার তছনছ করে দিল।’ নিহত ময়নার বড় বোন নাজমা আক্তার বলেন, ‘ছোডু বেলায় আমার বাপ মরছে, খুব কষ্ট কইরা আমরা বড় অইছি। আমগোর সন্দেহ তার (বোনের) দেউরে মারছে, আমরা তার ফাঁসি চাই।’ পুলিশ জানায়, বাড়িটির যে কক্ষে নজরুল থাকতেন, সেটির খাটের নিচ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। নজরুল ইসলাম গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় একটি হত্যা মামলায় ২ বছরের বেশি সময় জেল খাটার পর আড়াই মাস আগে জামিনে বের হয়। বড় ভাইয়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে অটোরিকশা চালাতেন নজরুল। ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গফরগাঁও সার্কেল) মনতোষ বিশ্বাস বলেন, গৃহবধূ ও দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ধারণা করছি, পারিবারিক কলহের জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। নিহতের দেবরের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। অপরাধীকে ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ