বগুড়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ শেষে স্ত্রী ও বাবাকে হাত-পা-মুখ বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা

১১ জুলাই, ২০২৫ | ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে সৌদি প্রবাসীর বাবা ও স্ত্রীকে হাত-পা, মুখ বেঁধে এবং শ্বাসরোধ হত্যা করা হয়েছে। হত্যার আগে তারা গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে। গৃহবধূর ৭ বছর বয়সী শিশুকন্যাটি অক্ষত রয়েছে। দুর্বৃত্তরা ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করলেও নেয়নি কিছুই। বুধবার গভীর রাতে উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমন্ডপ পূর্বপাড়া গ্রামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমন্ডপ পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত পানাউল্লাহ পচার ছেলে আফতাব হোসেন (৭০) ও তার সৌদি প্রবাসী ছেলে শাহজাহান আলীর স্ত্রী রিভা আকতার (৩০)। চাঞ্চল্যকর এই জোড়া খুন ও নৃশংসতায় স্তব্ধ পুরো গ্রাম। স্থানীয়দের মাঝে এ নিয়ে ক্ষোভ ও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দুপচাঁচিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার আলহাজ উদ্দিন জানান, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে হত্যার আগে গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এরপরও ডাক্তারি রিপোর্ট পেলে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রতিবেশীদের বরাতে জানা যায়, শাহজাহান আলী সৌদি আরবে কাজ করেন। লক্ষ্মীমন্ডপ পূর্বপাড়া গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা আফতাব উদ্দিন, স্ত্রী রিভা আকতার ও ৭ বছর বয়সী শিশু মালিহা বসবাস করেন। বুধবার রাতের কোনো একসময় ৪ দুর্বৃত্ত বাড়িতে ঢুকে শ্বশুর ও পুত্রবধূকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। রিভাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ শেষে দুর্বৃত্তরা ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করলেও টাকা, স্বর্ণালঙ্কার বা অন্য কিছু নিয়ে যায়নি। শিশু মালিকাও ছিল অক্ষত। শিশুটির কাছ থকেই জানা গেছে বাড়িতে ৪ জন লোক ঢুকেছিল। বৃহস্পতিবার সকালে শিশু মালিহার কান্নার শব্দে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে শ্বশুর ও পুত্রবধূর হাত, পা ও মুখ বাঁধা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। স্থানীয়দের ধারণা, হত্যার আগে তারা গৃহবধূ রিভা আকতারকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনাকে প্রতিশোধপরায়ণতা বলে মনে করছেন লোকজন। বৃদ্ধ আবতাবের খালাতো ভাই আমজাদ হোসেন জানান, আমার ভাই আফতাব মাদ্রাসা শিক্ষক ছিলেন। অবসর নেওয়ার পর কৃষি কাজ করতেন। চার ছেলেমেয়ের বড় শাহজাহান সৌদি প্রবাসী, এবং ছোট সিহাব পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকে। আমার ভাইয়ের সঙ্গে কারও বিরোধ ছিল না। জমিজমা নিয়ে কিছু মামলা-মোকদ্দমা আছে। এ কারণেও খুন হতে পারে। জিয়ানগর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান , নিহত আফতাবের কারও সঙ্গে কোনো বিবাদ ছিল না। তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা বলা মুশকিল। দুপচাঁচিয়া থানার থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আলহাজ উদ্দিন জানান, প্রতিবেশী নারীদের সহায়তায় সুরতহাল প্রতিবেদন করানোর সময় তারা গৃহবধূ রিভার শরীরে ধর্ষণের আলামত পেয়েছেন। এরপরও ডাক্তারি রিপোর্টে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ওসি ফরিদুল ইসলাম জানান, সৌদি প্রবাসী শাহজাহান আলীর বাবা ও স্ত্রীকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। বৃদ্ধের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে ঘর থেকে কিছু লুটটাটের আলামত মেলেনি। হত্যার আগে গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর পেছনে পূর্ব শত্রুতা, পারিবারিক বিরোধ বা চুরি-ডাকাতির বিষয় থাকতে পারে। এদিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও থানা পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করছে।