ইসরায়েলি হামলায় ১৮ সহস্রাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিহত

৯ জুলাই, ২০২৫ | ৫:০৪ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ কেবল সামরিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে সীমাবদ্ধ থাকেনি। এই যুদ্ধের ভয়াবহ ছায়া পড়েছে সবচেয়ে নিষ্পাপ ও দুর্বল জনগোষ্ঠী- শিশু, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক সমাজের উপর। ফিলিস্তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের বর্বর হামলায় গত ৯ মাসে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ১৮ হাজার ২৪৩ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষা কর্মী নিহত হয়েছে। একই সময় আহত হয়েছেন ৩১ হাজার ৬৪৩ জন। এর মধ্যে গাজা অঞ্চলে ১৭ হাজার ১৭৫ জন শিক্ষার্থী নিহত এবং ২৬ হাজার ২৬৪ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এ এলাকায় ৯২৮ জন শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মী নিহত এবং ৪ হাজার ৪৫২ জন আহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে পশ্চিম তীরে ১৪০ জন শিক্ষার্থী নিহত ও ৯২৭ জন আহত এবং ৭৬৮ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া ১৯৯ জন শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মী গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর ব্যাপক হামলা ও ক্ষয়ক্ষতি ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২৫২টি সরকারি স্কুল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১১৮টি স্কুল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। পশ্চিম তীরে ১৫২টি স্কুল ও ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। জেনিন, তুলকারেম, সালফিত ও তুবাস অঞ্চলের বহু স্কুলে বেড়া ধ্বংস করার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে এই অব্যাহত সহিংসতা ও শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক প্রাণহানি ও অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। শিশু ও শিক্ষকদের লক্ষ্যবস্তু বানানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থী বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন থেকে জানানো হয়েছে। এই পরিস্থিতি কেবল বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করেনি, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা অধিকারকে দীর্ঘমেয়াদে হুমকির মুখে ফেলেছে। এদিকে শিক্ষাক্ষেত্রে সহিংসতার প্রভাব শিশু মানসিক স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা, বন্ধুত্ব ও ভবিষ্যতের স্বপ্নের বদলে এখন যুদ্ধ, মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির বাস্তবতা মুখোমুখি হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজা ও পশ্চিম তীরের শিক্ষাক্ষেত্রে যেভাবে ধ্বংস নেমে এসেছে, তা শুধু একটি অঞ্চল নয়—বিশ্ব মানবতার জন্যই লজ্জাজনক। শিক্ষাকে লক্ষ্যবস্তু বানানো মানে ভবিষ্যতকে হত্যা করা। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হল সংঘাতের স্থায়ী সমাধান, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সত্যিকারের হস্তক্ষেপ, যেন শিক্ষা আবারো আশার আলো হয়ে উঠতে পারে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে।