ইউক্রেনে ‘রাসায়নিক অস্ত্র’ ব্যবহার করেছে রাশিয়া!

৫ জুলাই, ২০২৫ | ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

ইউক্রেনে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। আজ শুক্রবার নেদারল্যান্ডস ও জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই দাবি করেছে। এ ছাড়া এই দাবির পক্ষে প্রমাণও সংগ্রহ করেছে তারা। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে, ইউক্রেনে হামলার সময় ড্রোন থেকে শ্বাসরোধকারী রাসায়নিক ছুড়েছে রাশিয়া। এ জন্য মস্কোর বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছে নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুবেন ব্রেকেলন্স। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ড্রোন থেকে ‘চোকিং এজেন্ট’ নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। এই এজেন্ট হচ্ছে এক ধরনের শ্বাসরোধকারী রাসায়নিক। এই রাসায়নিক মানুষের দেহে প্রবেশ করলে ফুসফুসে চলে যায় এবং সেখানে পানি তৈরি করে। আর সে পানির কারণে মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হয়। এ নিয়ে নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুবেন ব্রেকেলন্স রয়টার্সকে বলেন, ‘মূলকথা হচ্ছে, আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার বাড়াচ্ছে। এই তীব্রতা উদ্বেগজনক। কারণ এটি এমন একটি প্রবণতার, যা আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করছি। এই যুদ্ধে রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার আরও সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠছে।’ জার্মানির বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি এই তথ্য নিশ্চিত করে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ডাচ গোয়েন্দাদের সঙ্গে মিলে এর প্রমাণ পেয়েছে। রয়টার্সই প্রথম এই গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। ডাচ মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (এমআইভিডি) প্রধান পিটার রিসিঙ্ক বলেছেন, ‘স্বতন্ত্র কিছু গোয়েন্দার তথ্য পেয়েছি, তাই আমরা আমাদের নিজস্ব তদন্তের ভিত্তিতে এটি নিজেরাই পর্যবেক্ষণ করেছি।’ তবে ইউক্রেন যুদ্ধে উভয় পক্ষের নিষিদ্ধ রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের বিষয়টি রয়টার্স যাচাই করতে পারেনি। আগেও তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ছিল। তবে রাশিয়া সেসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করে। এবারের অভিযোগের পর এখন পর্যন্ত রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রাশিয়া পাল্টা দাবি করে জানিয়েছে, ইউক্রেন এই সংঘাতে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। তবে ইউক্রেন এসব দাবি নাকচ করে দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ফোনালাপের কয়েক ঘণ্টা পর এই হামলা হয়েছে। এই ফোনালাপকে হতাশাজনক বলেছেন ট্রাম্প। এদিকে, ইউক্রেনে রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভের আকাশ স্থানীয় সময় শুক্রবার ধোঁয়া ও বিস্ফোরকের গন্ধে ভারী হয়ে উঠে। এই ব্যাপক বিমান হামলায় ইউক্রেনের রাজধানীর একাধিক ভবন ও আবাসিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, এটি তিন বছরের যুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাগুলোর একটি। কিয়েভের জরুরি সেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রাতের হামলায় অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে শহর ও সামরিক কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৩ ঘণ্টাব্যাপী এই হামলায় অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ার রেকর্ড ৫৩৯টি ড্রোনের মধ্যে ৪৭৬টি তারা ধ্বংস করেছে। এছাড়া রাশিয়া ১১টি ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।