ত্বকের যত্ন আর কখন করবেন, ৩০ পেরোলে?

বয়স ত্রিশের পর ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন কমতে থাকে। এসময় ত্বকের কোষ ধীর হয়ে পড়ে। সেই সাথে দীর্ঘ দিনের স্ট্রেস, রোদ-বাতাস আর অনিয়মিত জীবনযাপন, সবকিছুই যেন ত্বককে প্রভাবিত করে। তাই এই বয়সেই নিয়মিত ও সঠিক স্কিনকেয়ার রুটিন গড়ে তোলা খুবই জরুরি। শুধু পরিচ্ছন্নতা নয়, ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা, সানস্ক্রিন ব্যবহার, ময়েশ্চারাইজার ও এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি ত্বককে সতেজ ও তরতাজা রাখবেন। অর্থাৎ, ৩০ পেরোনোর পর নয়, বরং ত্রিশের আগেই ত্বকের যত্নকে গুরুত্ব দিন। এটাই ভালো ত্বকের মূল চাবিকাঠি। তবেই মিলবে দীর্ঘদিন ধরতে রাখতে পারবেন তরুণ ত্বকের গ্লো আর স্বাস্থ্য। রোদ হোক বা বৃষ্টি, সানস্ক্রিন ব্যবহার হবেই ত্বকের জন্য যদি আপনি প্রতিদিন মাত্র একটিই কাজ করেন, তাহলে সেটা হোক সানস্ক্রিন ব্যবহার। কারণ ইউভি রশ্মি কিন্তু আপনাকে একদমই পাত্তা দেবে না। বাইরে মেঘলা আকাশ, নাকি রোদ সেটি দেখার দরকার নেই। বাইরে গেলেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। একটি ব্রড-স্পেকট্রাম এসপিএফ ৩০ বা তার বেশি সানস্ক্রিন ত্বকের প্রথম সুরক্ষা দেয়। বলিরেখা, দাগছোপ, রঙের বৈষম্য আর ভবিষ্যতের ত্বক ঝুলে পড়ার মতো সমস্যাও সমাধান করে। প্রতিদিন সকালে ভালো করে সানস্ক্রিন মেখে বাইরে বের হন। আর যদি অনেকক্ষণ বাইরে থাকেন, তবে মাঝে মাঝে আবারও মেখে নিতে পারেন। ত্বকের যত্ন শুরু হোক সূর্যের আলো ঠেকিয়ে। ছোট্ট যে হ্যাকস সময় বাঁচাবে, নিখুঁত করবে মেকআপছোট্ট যে হ্যাকস সময় বাঁচাবে, নিখুঁত করবে মেকআপ ক্লান্ত চোখের যত্নে আই ক্রিম চোখের নিচের অংশে মুখের সবচেয়ে পাতলা ত্বক থাকে। আর ৩০-এর ঘরে পা রাখলেই এই অংশটা যেন সবকিছুর ‘চাপ’ দেখাতে শুরু করে। যার ফলাফল কালো ছাপ, ফোলাভাব বা সূক্ষ্ম রেখা। এই নাজুক জায়গাটিকে সতেজ আর মসৃণ রাখতে ব্যবহার করুন একটি ভালো আন্ডার-আই ক্রিম। যার মধ্যে থাকতে পারে ক্যাফেইন, পেপটাইড বা হায়ালুরনিক অ্যাসিড। এগুলো ত্বককে আর্দ্র রাখে, ফোলাভাব কমায় এবং চোখের নিচের অংশকে উজ্জ্বল রাখে। প্রতিদিন রাতে, রিং ফিংগারের সাহায্যে হালকা করে ট্যাপ করে লাগিয়ে নিন এই আই ক্রিম। ত্বকের যত্নে ছোট এই অভ্যাস বদলে দিতে পারে আপনার চোখের চেহারা। ত্বক বিশেষজ্ঞদের প্রিয় উপাদান, রেটিনল চেনেন এই উপাদানকে? নাম রেটিনল, ভিটামিন এ-এর এক ধরনের রূপ। যেটি ত্বকের যত্নে একেবারে গেমচেঞ্জার। ত্বক বিশেষজ্ঞরা এটি নিয়ে প্রশংসা করেন। কারণ- প্রথমে হালকা ঘনত্ব দিয়ে শুরু করুন, সপ্তাহে ২–৩ দিন ব্যবহার করুন। আর মনে রাখবেন, রেটিনল ব্যবহারের পরের দিন অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। কারণ রেটিনল ব্যবহারে ত্বক সূর্যের প্রতি বেশি সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। রাতের ত্বকের যত্নে রেটিনল হতে পারে আপনার নতুন বিশ্বস্ত সঙ্গী। বৃষ্টির দিনে ত্বকের যত্ন নেওয়ার সঠিক উপায়বৃষ্টির দিনে ত্বকের যত্ন নেওয়ার সঠিক উপায় ত্বকের জন্য ডাবল ক্লেনজিং শুধু পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নেওয়ার দিন শেষ। ত্রিশের ঘরে পা দিলে ত্বকের যত্নে দরকার বাড়তি যত্ন। কারণ এই বয়সে আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করছেন সানস্ক্রিন, মেকআপ আর ধুলাবালি-দূষণ তো আছেই। তাই দরকার ডাবল ক্লেনজিং। প্রথম ধাপে নিন অয়েল-বেসড ক্লেনজার। যা মেকআপ, সানস্ক্রিন আর দিনের শেষে জমে থাকা ময়লা গলিয়ে ফেলবে। এরপর ব্যবহার করুন ফোমিং বা ক্রিম ক্লেনজার। যা ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করবে। এর ফলে ত্বকের রন্ধ্রগুলো (পোরস) খুলে যাবে। আর আপনার স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টগুলোও ত্বকে ভালোভাবে কাজ করতে পারবে। রাতে ঘুমানোর আগে এই দু’ধাপের পরিষ্কার করলে, আপনার ত্বকে ফিরবে সতেজতা। নিয়মিত ফেসিয়াল ম্যাসাজ বা গুয়াশা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন ধীর হয়ে যায়, লসিকা প্রবাহ ঠিকঠাক কাজ করে না। আর ত্বক হয়ে পড়ে ক্লান্ত। অনেক সময় ত্বক ফুলে যায়। এই সমস্যা ঠিক করতে পারে নিয়মিত ফেসিয়াল ম্যাসাজ বা গুয়াশা। কয়েক মিনিটের হালকা ম্যাসাজ ত্বকে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়। সেই সাথে ফোলাভাব কমায়। আর মুখের টানটান ভাব দূর করে স্বস্তি আনে। বিশেষ করে যদি আপনি সারাদিন স্ক্রিনের সামনে থাকেন। কীভাবে গুয়াশা ব্যবহার করবেন? একটু ফেস অয়েল বা সিরাম নিয়ে খুব হালকা চাপ দিয়ে ম্যাসাজ করুন। সবসময় ওপরের দিকে এবং বাইরে দিকে স্ট্রোক দিন। এই ছোট্ট রিল্যাক্সিং রুটিনটি আপনার ত্বককে করে তোলে সতেজ, টানটান এবং যত্নে রাখা অনুভব দেয়।