ল্যান্ডমাইন নিষিদ্ধকরণ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন, ইউরোপে বাড়ছে সামরিক তৎপরতা

১ জুলাই, ২০২৫ | ৯:১৭ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চল এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও বেলারুশের মতো ৩৩টি দেশ এখনো এতে যোগ দেয়নি। আর সম্প্রতি এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে ফিনল্যান্ড ও পোল্যান্ড। একই পথে হাঁটার ঘোষণা দিয়েছে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া। অ্যান্টি-ল্যান্ডমাইন অটোয়া কনভেনশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউক্রেন। রোববার এ বিষয়ে একটি ডিক্রি জারি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে এ সিদ্ধান্ত বলবৎ করতে ইউক্রেনীয় পার্লামেন্টে তা অনুমোদিত হতে হবে এবং জাতিসংঘকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করতে হবে। মস্কোর আগ্রাসনের তিন বছরের বেশি সময় পর এ পদক্ষেপ নিল কিয়েভ। এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নাগরিকদের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষাকে নিঃশর্ত অগ্রাধিকার দেয়ার প্রয়োজনেই ইউক্রেন এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। নিজেদের ভূখণ্ডকে দখলমুক্ত রাখতে এবং রুশ বাহিনীর বর্বরতা থেকে মানুষকে রক্ষা করতে এটি জরুরি বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। অ্যান্টি-ল্যান্ডমাইন অটোয়া কনভেনশনে স্বাক্ষর করা দেশগুলো অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন সংগ্রহ, উৎপাদন, মজুদ বা ব্যবহারে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলে। এ ধরনের মাইন সাধারণত মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। এটি তাৎক্ষণিক প্রাণঘাতী নাও হলেও বহু মানুষকে পঙ্গু করে দেয়। এছাড়া যুদ্ধ শেষে বহুদিন ধরে অবিস্ফোরিত অবস্থায় থেকে যাওয়ার কারণে বেসামরিক মানুষের জন্য চরম ঝুঁকি তৈরি হয়। বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চল এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও বেলারুশের মতো ৩৩টি দেশ এখনো এতে যোগ দেয়নি। আর সম্প্রতি এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে ফিনল্যান্ড ও পোল্যান্ড। একই পথে হাঁটার ঘোষণা দিয়েছে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া। এদিকে এ চুক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছে কানাডা। সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আধুনিক যুদ্ধের বাস্তবতা বিবেচনায় দেশটিতে এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার দাবিও জোরালো হচ্ছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে ন্যাটোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর একটি হয়ে দাঁড়িয়েছে এর পূর্ব সীমান্ত রক্ষা। গত তিন বছরে রাশিয়া ও বেলারুশের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে নেয়া ছয়টি ন্যাটো দেশের মধ্যে—ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড—এরই মধ্যে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সীমান্ত বেড়া নির্মাণ ও নজরদারি ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ। কিন্তু এবার আরো একধাপ এগিয়ে, ল্যান্ডমাইন ব্যবহারের পথে হাঁটছে এই পাঁচ দেশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ পূর্ব ইউরোপের এ দেশগুলো সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন উৎপাদন ও মজুত শুরু করতে পারে। জরুরি পরিস্থিতিতে এ মাইন দ্রুত মোতায়েন করা হবে।