কেন্দ্রের আন্দোলন এবার ছড়িয়ে পড়ল মাঠ প্রশাসনে

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের আন্দোলন কেন্দ্র থেকে মাঠ প্রশাসনে ছড়িয়ে পড়েছে। সচিবালয় থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তর পর্যন্ত আন্দোলন ছড়িয়ে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে গণসংযোগ। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কল্যাণ কমিটি, অধিদপ্তর, সংস্থা, পরিদপ্তর, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসক (ডিসি) অফিস এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে জনসংযোগের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। সোমবার সচিবালয় লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত দুই ঘণ্টার কলম বিরতি শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর। এ সময় কো- চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম এবং মহাসচিব মো. নজরুল ইসলাম। কলম বিরতি কর্মসূচির সমাবেশে মো. বাদিউল কবীর বলেন, দীর্ঘ এক মাস সচিবালয়ের ভেতরে আন্দোলন চলছে। ঈদের ছুটির পর টানা আন্দেলনের মধ্যে ভালো খবরের আশায় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এক দিনের বিরতি দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মন্ত্রণালয়গুলোতেও কর্মবিরতি পালন হচ্ছে। আমি ঘুরে ঘুরে এমন দৃশ্য দেখেছি। আগামীকাল আমরা ঢাকায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে দেখা করে গণসংযোগ করব। বৃহত্তর আন্দোলন শুরুর জন্য একটু বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। বদিউল কবির বলেন, সরকার যে আমাদের কথা একেবারেই শুনছে না তা কিন্তু নয়। কিছু বিষয় সবার সঙ্গে শেয়ার করি, কিছু বিষয় কৌশলগত কারণে শেয়ার করি না। যেমন আজও একজন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের জরুরি বৈঠক রয়েছে। সেখান থেকে কোনো ভালো খবর আসবে বলে আমরা আশা করি। এর আগে আরেক কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, গতকাল একজন সাবেক সরকারি আমলাকে জনগণ ধরে কী পরিস্থিতি করেছে আপনারা সবাই দেখেছেন। কাজ করলে কাজের পরিণতি সবাইকে ভোগ করতে হবে। সেটা মাথায় রেখে এখনই অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করুন। গত রোববার মো. নুরুল ইসলাম বলেছেন, আমার সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের সংশোধন মানি না। নিবর্তণমূলক অধ্যাদেশটি বাতিল করতে হবে। কোনোভাবেই সংশোধন মানা হবে না। সোমবার কর্মসূচিতে অংশ নিতে সকাল ১১টার পর থেকেই বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারি ঐক্য ফোরামের নেতাকর্মী জনপ্রশাসন লাইব্রেরিতে সমবেত হন। দুই ঘণ্টা বক্তৃতা, মতবিনিময় ও পর্যালোচনা শেষে ঘোষণা দিয়ে তারা নামাজ পড়তে চলে যান। উল্লেখ্য সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কুরবানির ঈদের ছুটির পর গত ১৫ জুন থেকে টানা মিছিল, অবরোধ, বিক্ষোভসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন কর্মচারীরা। একই সময়ে অধ্যাদেশটি পর্যালোচনায় কাজ করছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা কমিটি। কমিটিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ রয়েছেন। কমিটি ইতোমধ্যে দুটি মিটিং করলেও কোনো ধরনের সুপারিশ দিতে পারেনি। ৪ জুন গঠিত কমিটির প্রজ্ঞাপনে আন্দোলনরত কর্মচারিদের সঙ্গে আলোচনার কথা বলা হলেও গত দুইটি বৈঠকে কর্মচারীদের ডাকা হয়নি। কিন্তু গতকাল (সোমবার) আইন উপদেষ্টার দপ্তরে তিনজন কর্মচারী নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।