প্রবাসীদের মুক্তির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে মিছিল, সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে কারাগারে আটক প্রবাসী বাংলাদেশিদের মুক্তির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে মিছিল করেছেন বিদেশফেরত প্রবাসীরা। তবে পুলিশের বাধার মুখে মিছিলটি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে আটকে যায়। পরে বিক্ষোভকারীরা সেখানে অবস্থান নেন। এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রবাসীরা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিষ্ক্রিয়তার তীব্র সমালোচনা করেছেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল সদর কারাগারে ২৫ জনসহ সৌদি আরব ও অন্যান্য দেশে আটক প্রবাসীদের মুক্তির জন্য সরকার কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি। তারা দাবি করেন, পূর্ববর্তী শেখ হাসিনার সরকার বিদেশে সাজাপ্রাপ্ত দুই বাংলাদেশিকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে দেশে ফিরিয়ে এনেছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার জুলাই আন্দোলনে সংহতি জানানোর কারণে শত শত প্রবাসী বিদেশে কারাগারে আটক থাকলেও তাদের মুক্তির জন্য কোনো উদ্যোগ বা খোঁজখবর নিচ্ছে না। মিছিলে অংশ নেওয়া একজন প্রবাসী বলেন, “আমরা আমাদের ভাই-বোনদের মুক্তির জন্য সরকারের কাছে সাহায্য চাইছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাচ্ছি না। শেখ হাসিনার সরকার প্রবাসীদের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিল, কিন্তু বর্তমান সরকারের উদাসীনতায় আমরা হতাশ।” এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করার কারণে গ্রেফতার হওয়া ১৮৮ জন প্রবাসীকে ক্ষমা করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে অনেকে ইতোমধ্যে দেশে ফিরেছেন। তবে এখনও ২৫ জন আবুধাবির কারাগারে আটক রয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা এই প্রবাসীদের মুক্তির জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এক প্রবাসী নেতা বলেন, “আমাদের দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদান অপরিসীম। কিন্তু তাদের এই দুর্দশার সময় সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমরা চাই সরকার অবিলম্বে পদক্ষেপ নিয়ে আটক প্রবাসীদের মুক্তি নিশ্চিত করুক।” প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গত ৩ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিলেন, ড. ইউনূস সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করে ৫৭ জন প্রবাসীর ক্ষমা নিশ্চিত করেছেন। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, এরপরেও অনেক প্রবাসী বিভিন্ন দেশে কারাগারে রয়েছেন, এবং তাদের মুক্তির জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন। বিক্ষোভকারীরা ‘জুলাই প্রবাসী যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি, পুনর্বাসন, এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বলছেন, সরকার যদি তাদের দাবি না মানে, তবে তারা আরও বড় আন্দোলনের পথে হাঁটবেন।