পরিত্যক্ত বিমানবন্দর চালুর পাশাপাশি সেবার মানও নিশ্চিত করতে হবে

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

দেশের সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের চাপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। কোনো কোনো দিন মহাসড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ অবস্থায় দেশের পরিত্যক্ত বিমানবন্দরগুলো দ্রুত চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলে বিনিয়োগ বহুগুণ বাড়বে। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের সামর্থ্য বেড়েছে, যারা সড়ক যোগাযোগের পরিবর্তে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে আকাশপথে যোগাযোগে আগ্রহী। জানা যায়, দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিত্যক্ত, অব্যবহৃত ও দখলে থাকা সাতটি বিমানবন্দর নতুন করে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এগুলো হচ্ছে ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, বগুড়া, শমসেরনগর, কুমিল্লা ও তেজগাঁও বিমানবন্দর। আশা করা যায়, দেশের অভ্যন্তরীণ পর্যটন খাতের বিকাশ ও যাত্রী পরিবহণ বাড়াতে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বর্তমানে এই বিমানবন্দরগুলোর কোনোটিতেই বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করে না। কয়েকটি রয়েছে বিভিন্ন সংস্থার দখলে। কয়েকটি বিমানবন্দরের রানওয়েতে গরু-ছাগলসহ গবাদিপশু অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনো কোনো বিমানবন্দরের সীমানা প্রাচীরসহ কোনো ধরনের নিরাপত্তা চৌকিও নেই। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত থাকায় রানওয়ের শক্তি পিসিএন (পেভমেন্ট ক্ল্যাসিফিকেশন নাম্বার) নষ্ট হয়ে গেছে। বস্তুত সংস্কারের অভাবে এ বিমানবন্দরগুলোর রানওয়ে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের পরিত্যক্ত বিমানবন্দরগুলো চালুর লক্ষ্যে রানওয়ের সংস্কারসহ যেসব অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে, সেগুলোর মান নিয়ে যাতে কোনো প্রশ্ন না উঠে সেদিকে কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। মেগা প্রকল্পসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে যে গতির সঞ্চার হয়েছে তা আরও বেগবান করতে যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা মনে করি, দেশের পরিত্যক্ত সব বিমানবন্দর চালু করার পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পের বিকাশের সহায়ক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় সব এলাকায় নতুন বিমানবন্দর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। উচ্চ প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার পূর্বশর্ত হচ্ছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। দুঃখজনক হলো, দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে উন্নীত হয়নি। বিমান যোগাযোগের পাশাপাশি সড়ক, রেল ও নৌ যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত উন্নয়নেও যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে। গত শতকের পঞ্চাশের দশকে মাথাপিছু গড় আয়ের দিক থেকে মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ানের অবস্থান বাংলাদেশের প্রায় কাছাকাছিই ছিল। এসব দেশ বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়নেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। যার ফলে এই দেশগুলোতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। আমাদেরও সেই পথ অনুসরণ করা উচিত।