উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে ভরা মঞ্চে দলের নেতাকে মালা পরিয়ে সপাটে চড় মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। Video Player is loading. Close PlayerUnibots.com সুহেলদেব স্বাভিমান দলের সভাপতি মহেন্দ্র রাজভরকে তার দলেরই এক কর্মী, ব্রিজেশ রাজভর, মারধর করেছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনা ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। 1 ‘রাম সেবক ইউপি’ নামের একটি এক্স হ্যান্ডল থেকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, গত শুক্রবার জৌনপুর জেলায় একটি ভূমিপূজা ও মহারাজা সুহেলদেবের বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান চলছিল। মঞ্চে অন্যান্যদের সাথে দাঁড়িয়ে ছিলেন দলের সভাপতি মহেন্দ্র রাজভর। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, তাকে মালা পরানোর জন্য মঞ্চে ওঠেন দলের কর্মী ব্রিজেশ। মালা পরানোর পরই আকস্মিকভাবে তিনি মহেন্দ্র রাজভরের গালে পর পর চড় মারতে শুরু করেন। ঘটনার পর মহেন্দ্র রাজভর ব্রিজেশের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। নিউইয়র্ক কি ইতিহাসে প্রথম কোনো মুসলিম মেয়র পেতে যাচ্ছে? সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় মহেন্দ্র রাজভর জানান যে, ভূমিপূজার সময় ব্রিজেশ তাকে মালা পরিয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, যখন তার বক্তৃতা করার পালা এসেছিল, তখনই ব্রিজেশ তাকে বেশ কয়েকবার চড় মারেন। মহেন্দ্রের আরও অভিযোগ, সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির নেতা এবং যোগী আদিত্যনাথের সরকারের মন্ত্রী ওম প্রকাশ রাজভরের নির্দেশেই ব্রিজেশ এই হামলা চালিয়েছেন। তবে, মহেন্দ্রের আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্রিজেশ। পাল্টা অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “অনুষ্ঠানে এসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় মহেন্দ্র অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।” এই ভিডিওর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি, তবে এটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

উত্তর আয়ারল্যান্ডের বালিমিনা শহর টানা দ্বিতীয় দিনেও রীতিমত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সেখানে মাস্ক পরা বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়, গাড়ি ও বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। রয়টার্স জানিয়েছে, ঘটনাটি শুরু হয় সোমবার, এক কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে ঘিরে হওয়া একটি বিক্ষোভ থেকে। পুলিশ জানায়, এতে মঙ্গলবার রাতেও ১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। এ নিয়ে দুই দিনে আহত পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ জনে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতেও বিক্ষোভকারীরা পেট্রল বোমা, ব্লকেড ভেঙে ফেলা ইট-পাথর ও ধাতব কাঠামো ছুঁড়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। পুলিশ জল কামান ও অপ্রাণঘাতী রাবার বুলেট দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ও উত্তেজনার সূচনা এই সহিংসতার সূত্রপাত হয় সোমবার শহরটির ১৪ বছর বয়সি দুই কিশোর আদালতে হাজির হওয়ার পর। তাদের বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়। পরে শুনানিতে রোমানিয়ান ভাষায় অনুবাদক ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। যদিও দুজনই আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে তাদেরকে ২ জুলাই পর্যন্ত হেফাজতে রাখা হয়েছে। এদিকে সোমবার রাতের হামলায় চারটি ঘরবাড়ি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা পুলিশ বর্ণবাদ-প্রসূত ঘৃণামূলক অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এক রোমানিয়ান নারী বলেন, তিনি নিজের বাড়ির জানালায় ব্রিটিশ পতাকা লাগিয়ে রেখেছেন, যাতে হামলার লক্ষ্যবস্তু না হন। বেলফাস্ট টেলিগ্রাফে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা গেছে, একটি বাড়ির দরজায় ব্রিটিশ ও ফিলিপিনো পতাকার নিচে লেখা, ‘Filipino lives here’ অর্থাৎ ‘ফিলিপিনোরা এখানেই বসবাস করে’। এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে সোমবার গ্রেফতারকৃত একজনও রয়েছে। দাঙ্গা ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া পুলিশ প্রধান জন বাউচার বলেন, ‘বালিমিনায় যেসব মূর্খতাপূর্ণ সহিংসতা ঘটেছে তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। ঘৃণা-প্রসূত আচরণ ও জনতার শাসন সমাজের বন্ধন ছিন্ন করে দেয়—এই আচরণ বন্ধ হতে হবে’। একটি বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়, আরেকটি বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তা অসুস্থ হন ও বমি করেন। এদিন কয়েকটি গাড়িও আগুনে পুড়ে যায়। এর মধ্যে একটি গাড়ি উল্টে আগুনে জ্বলতে দেখা গেছে। কেবল বালিমিনাই নয়, বেলফাস্ট, নিউটাউনঅ্যাবি ও ক্যারিকফারগাস শহরেও পুলিশের ওপর বোতল, ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে ব্রিটেনের উত্তর আয়ারল্যান্ড বিষয়ক মন্ত্রী হিলারি বেন বলেছেন, ‘বালিমিনায় আবারও যে বেসামাল সহিংসতার দৃশ্য আমরা দেখলাম, তা উত্তর আয়ারল্যান্ডের জন্য সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’। প্রেক্ষাপট উত্তর আয়ারল্যান্ডে মাঝে মধ্যেই উত্তেজনার সময় পুলিশ আক্রমণের শিকার হয়, যদিও ১৯৯৮ সালের শান্তিচুক্তির পর তিন দশকের সাম্প্রদায়িক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটে। তবুও সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে স্থিতিশীলতা এখনো ভঙ্গুর।