যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ, শহরজুড়ে আতঙ্ক

৮ জুন, ২০২৫ | ৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে দ্বিতীয় দিনের মতো অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ক্রাকডাউন অব্যাহত রয়েছে। এ অভিযানের বিরুদ্ধে একটি ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধরা। এ সময় তাদের ওপর টিয়ার গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। শনিবার (০৭ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার প্যারামাউন্ট শহরের একটি শিল্প পার্কের সামনে রায়ট গিয়ার ও গ্যাস মাস্ক পরিহিত বর্ডার প্যাট্রোল কর্মীরা দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় পাশে থাকা লোকজন তাদের উপহাস করছিল। একজন নারী মেগাফোনে ঘোষণা দিয়ে বলেন, আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) প্যারামাউন্ট থেকে বের হয়ে যাও। আমরা তোমাদের আসল রূপ দেখেছি। তোমরা এখানে স্বাগত নও। একটি হাতে লেখা সাইনবোর্ডে লেখা ছিল, কোনো মানুষই অবৈধ নয়। শুক্রবার আইসিইর অভিযানে অন্তত ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অভিযান চালানো হয় একাধিক স্থানে, যার মধ্যে একটি পোশাকের গুদামও ছিল। মানবাধিকার কর্মীরা একে ‘নিপীড়নমূলক ও জঘন্য আধাসামরিক অভিযান’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে লস অ্যাঞ্জেলস শহরের এডওয়ার্ড আর রয়্যাল ফেডারেল বিল্ডিং ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়, যেখানে আটক অভিবাসীদের প্রক্রিয়াকরণ চলছিল। বিক্ষোভকারীরা ভবনের প্রবেশ ও প্রস্থান পথ অবরোধ করে। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) এই অভিযানের নিন্দা জানিয়ে অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে ‘মুখোশধারী গুন্ডা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা আমাদের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানাই যেন তারা অভিবাসী ও অ-অভিবাসী সব অ্যাঞ্জেলেনোদের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখেন এবং এই দমনমূলক ও জঘন্য প্যারামিলিটারি অপারেশন বন্ধ করতে এবং আমাদের শহরকে নিরাপদ ও অখণ্ড রাখতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। হোয়াইট হাউসের সিনিয়র উপদেষ্টা এবং ট্রাম্পের মূল অভিবাসনবিরোধী প্রবক্তা স্টিফেন মিলার শনিবার এক্স-এ লিখেছেন, আইসিই অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভগুলো যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’। অন্য একটি পোস্টে মিলার বলেন, লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ প্রধান জিম ম্যাকডোনেল নাগরিকদের উপর আক্রমণকারীদের পক্ষ নিয়েছেন। তিনি বলেন, তার অফিসাররা কোনোভাবেই আইসিইকে সাহায্য করবে না। আলজাজিরা জানিয়েছে, এই অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ অভিযান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী রেকর্ড সংখ্যক মানুষকে নির্বাসনের প্রতিশ্রুতির অংশ। হোয়াইট হাউস আইসিইর জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৩,০০০ অভিবাসীকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস শুক্রবার এই অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এই কৌশলগুলো আমাদের সম্প্রদায়ে আতঙ্ক ছড়ায় এবং আমাদের শহরের নিরাপত্তার মৌলিক নীতিগুলোকে ব্যাহত করে। আমরা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াব। আইসিইর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টড লিয়ন্স বাসের বিবৃতির সমালোচনা করে বলেন, মেয়র আইন প্রয়োগের উপর বিশৃঙ্খলা ও আইনহীনতার পক্ষ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ভুল করবেন না, আইসিই আমাদের দেশের অভিবাসন আইন প্রয়োগ করবে এবং অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করবে।