দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলে বিশেষ প্রকল্পের তাগিদ

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৯:০৯ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন ও লবণাক্ততায় প্রতিবছর দেশে বাড়ছে বাস্তুহীন মানুষ। হ্রাস পাচ্ছে কৃষিজমি। করোনার অভিঘাত শেষ না হতেই ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে নতুন করে মানুষ দরিদ্র হচ্ছে। বিশেষ করে দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষ সবচেয়ে কষ্টে আছে। তাদের জন্য সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি যথেষ্ট নয়। দেশের দুর্যোগপ্রবণ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য বিশেষ প্রকল্প নেওয়া দরকার। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে প্রচারণা, সচেতনতা, গবেষণা ও তদারকি বাড়াতে হবে। গতকাল রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে কার্যালয়ে 'প্রান্তিক মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি :কৌশল ও চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব অভিমত তুলে ধরেন বিশিষ্টজন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ ও সমকালের যৌথ উদ্যোগে গোলটেবিল আয়োজনে সহযোগিতা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেড-এর পরিচালক ফিলিপ গাইন। প্রবন্ধে তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির জন্য বাজেট বরাদ্দ ও উপকারভোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। তবে বরাদ্দের বড় অংশ চলে যাচ্ছে দরিদ্র নয়- এমন মানুষের পকেটে। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও উপকারভোগী বাছাই হচ্ছে নির্বাচন ও রাজনৈতিক বিবেচনায়। ফলে বরাদ্দের ৬৫ শতাংশ দরিদ্র নয়- এমন মানুষের হাতে চলে যাচ্ছে। ফিলিপ গাইন আরও বলেন, দেশে দরিদ্র এবং হতদরিদ্রদের ভূসম্পদে মালিকানা নগণ্য। গ্রামাঞ্চলে যাদের জমি নেই, তারা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে শক্তিহীন। উচ্চ শিক্ষা থেকেও বঞ্চিত। ফলে বংশানুক্রমিকভাবে এ জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে বের হতে পারছে না। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ বেশি অরক্ষিত। তারা সরকারি কিছু সুযোগ-সুবিধা পেলেও দরিদ্রতা থেকে বের হতে তা যথেষ্ট নয়। গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, বিশেষ অতিথি হিসেবে খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য এবং সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সাতক্ষীরা-১ আসনের এমপি মোস্তফা লুৎফুল্লা, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের গভর্ন্যান্স প্রোগ্রামের ম্যানেজার নূরুল কাদের, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহিন আনাম, উত্তরণের পরিচালক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে দেশে সামাজিক-রাজনৈতিক কোনো নিরাপত্তাই ছিল না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা খাতে আসছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা মাইকিং করে বয়স্ক, প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন ভাতা দিচ্ছেন। দেশের অর্ধেক উপজেলায় এসব ভাতা শতভাগ দেওয়া হচ্ছে। ভিক্ষাবৃত্তি নিবৃত্ত করতে জেলা প্রশাসকদের ফান্ড দেওয়া আছে। ভূমিহীনদের ঘর করে দিচ্ছে সরকার। এখন এসব ভাতা ডিজিটাল মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়া হয়। অনিয়ম করার সুযোগ কম। সরকারের উদ্যোগে দেশের মানুষের এখন অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে দুর্যোগকালীন ক্ষয়ক্ষতিও কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।