নতুন পার্ক তৈরির উদ্যোগ

২৫ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৯:৫৪ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

রাজধানী ঢাকায় ৮৮টি নতুন পার্ক তৈরির উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। তবে পার্ক তৈরিই যথেষ্ট নয়, প্রতিটি পার্ক কঠোরভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। আমরা জানি, এ নগরীতে একসময় অনেক পার্ক ছিল, মাঠ ছিল, খাল ছিল-যার সিংহভাগই আজ আর নেই। বেশির ভাগ পার্ক-মাঠ বেদখল এবং খাল ভরাট হয়ে গেছে। হাতেগোনা যে কয়টি পার্ক টিকে আছে, সেগুলোও রয়েছে বেদখল হওয়ার অপেক্ষায়। এগুলো এমনই দুরবস্থার শিকার যে, সেখানে সাধারণ মানুষ মুক্ত বায়ু সেবন করতে পারে না; শিশু-কিশোররা পারে না খেলাধুলা করতে। বিভিন্ন মাঠ ও পার্ক রিকশাভ্যানের গ্যারেজ এবং গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। আর এসব চলছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জরিপে দেখা গেছে, ঢাকার ৮২ শতাংশ এলাকা ঢেকে গেছে কংক্রিটে, দুই দশক আগেও যা ছিল ৬৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। জলাভূমি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশে, যা দুই দশক আগে ছিল ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। বস্তুত এ নগরী ক্রমেই পরিণত হচ্ছে এক কংক্রিটের স্তূপে। হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ। এতে রাজধানী ঢাকা কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই হারাচ্ছে না, এ নগরীতে ভয়াবহ মাত্রায় বাড়ছে দূষণ। ঢাকা আজ পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত নগরী হিসাবে পরিচিত। এটি আমাদের জন্য গ্লানির বিষয়। দুশ্চিন্তার বিষয় তো বটেই। কারণ দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য হানিকর। বস্তুত এ নগরী ক্রমেই বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। বাসযোগ্যতা ফেরাতে এ অবস্থার পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি। ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ বসবাস করে এ নগরীতে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় ন্যূনতম উন্মুক্ত স্থান নেই। এজন্যই ঢাকায় বসবাস করা মানুষের জন্য দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থার পরিবর্তনে রাজধানীতে উন্মুক্ত স্থান ও গাছপালার সংখ্যা বাড়ানোর বিকল্প নেই। নতুন পার্ক তৈরির ফলে সেই চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ হবে। জানা যায়, রাজধানী উন্নয়ন করপোরেশন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং আরও কয়েকটি সংস্থা ইতোমধ্যেই এ কাজ শুরু করেছে। আমরা এ পদক্ষেপের পূর্ণাঙ্গ ও সফল বাস্তবায়ন দেখতে চাই। তবে এই ৮৮টি পার্ক তৈরিই যথেষ্ট নয়, রাজধানী ও এর আশপাশে আরও অনেক উন্মুক্ত স্থান, সেই সঙ্গে জলাশয় প্রয়োজন। এদিকে আন্তরিক দৃষ্টি দিলে এ মহানগরী আবারও ফিরে পেতে পারে প্রাণ।