যে কারণে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন জেসিন্ডা

২০ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৫:৩৫ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

নিউজিল্যান্ডের আলোচিত প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।তার এই ঘোষণা অবাক করেছে সবাইকে।পদত্যাগের ঘোষণা দিলেও আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন আরডার্ন। ২০২০ সালের নির্বাচনে বিপুল জয়ের মধ্য দিয়ে জেসিন্ডা দ্বিতীয় মেয়াদে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন। যদিও এবার তার জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা দেখা যায়। এর অন্যতম কারণ-সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা কমতে থাকা, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ও রক্ষণশীল বিরোধীদের পুনরুত্থান। এসব বিষয় জেসিন্ডার ওপর চাপ তৈরি করছিল, যার আলামতও প্রকাশ পেয়েছিল। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে অরডার্ন (৪২) চোখের পানি সংবরণ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করা সাড়ে পাঁচ বছর কঠিন সময় ছিল। আমি কেবলই একজন মানুষ। আমার এখন সরে দাঁড়ানো দরকার।’ খবর রয়টার্স, বিবিসির। জেসিন্ডার পদত্যাগের পেছনে তার ব্যক্তিগত জীবনের ব্যস্ততাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছর অরডার্নের কন্যা নেভের স্কুলজীবন শুরু হবে। ওই সময় তিনি কন্যার পাশে থাকার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন, এখন নেভেকে এটি বলতে পারবেন এবং দীর্ঘদিনের জীবনসঙ্গী ক্লার্ক গেফোর্ডকে ‘এখন তাদের বিয়ে করার সময় হয়েছে’ বলে জানাতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। রাজনীতি বিশ্লেষক বেন টমাস বলেছেন, অরডার্নের ঘোষণা বিরাট এক বিস্ময়, কারণ ২০২০-এর নির্বাচনের সময় দেখা তার দলের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পরবর্তীতে হ্রাস পেলেও দেশের পছন্দের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সবগুলো জরিপে এগিয়ে আছেন তিনি। অরডার্নের পরিষ্কার কোনো উত্তরাধিকারী নেই বলে জানিয়েছেন টমাস। অরডার্ন জানিয়েছেন, কাজ কঠিন ছিল এর জন্য সরে দাঁড়াচ্ছেন না তিনি, বরং অন্যরা আরও ভালো করবে বলে মনে করেন তিনি। প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর জেসিন্ডাকে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তার মধ্যে ছিল নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা, আগ্নেয়গিরির প্রাণঘাতী উদ্গিরণ ও করোনা মহামারির চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন জেসিন্ডা। তিনি হয়ে ওঠেন প্রগতিশীল রাজনীতির বৈশ্বিক ‘মূর্ত প্রতীক’ বা ‘আইকন’। আরডার্ন পদত্যাগের ঘোষণায় বলেন, দেশের নেতৃত্ব দেওয়া অব্যাহত রাখতে তিনি আর ‘সমর্থন চাইবেন না।’ ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকেই পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পরবর্তী নির্বাচনেও আর প্রার্থী হবেন না। বলেন, ‘এই গ্রীষ্মে আমি শুধু আরেকটি বছরের জন্য নয়, আরেকটি মেয়াদের জন্য প্রস্তুত হওয়ার একটি উপায় খুঁজে পাওয়ার আশা করেছিলাম-কারণ এই বছরের জন্য এটিই প্রয়োজন। আমি তা করতে পারিনি।’ আরও বলেন, আমি জানি এই সিদ্ধান্তের পর এর তথাকথিত ‘প্রকৃত’ কারণ কী ছিল তা নিয়ে অনেক আলোচনা হবে কিন্তু আপনারা যা পাবেন তা হলো বড় কিছু চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে ছয় বছর পার করার পরও আমি মানুষ। রাজনীতিকরা মানুষ। আমরা যতটা পারি, যতদিন পারি, সবই দিই তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আসে। আর আমার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসে গেছে।