খুজদারে স্কুলবাসে হামলা, জাতিসংঘে ভারতের দিকেই আঙুল পাকিস্তানের

২৪ মে, ২০২৫ | ৫:২২ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে খুজদার হামলার ঘটনায় ভারতের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানি প্রতিনিধি সাইমা সেলিম বলেন, এই হামলায় নিষিদ্ধ সংগঠন টিটিপি, বিএলএ এবং মজিদ ব্রিগেডের মাধ্যমে ভারত মদদ দিয়েছে, যার ফলে নিরীহ স্কুলশিশুরা প্রাণ হারিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভারতের এমন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ শুধু পাকিস্তানের অভ্যন্তরেই নয়, পুরো অঞ্চলের শান্তির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি খুজদারে শিশু বহনকারী একটি বাসে হামলার বিষয়টি উল্লেখ করে ভারতের সংশ্লিষ্টতার কথা তুলে ধরেন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সশস্ত্র সংঘাতে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা বিষয়ক আলোচনায় ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা তীব্র বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসিম ইফতিখার আহমদ অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক আগ্রাসনের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষের বসতবাড়ি ও উপাসনালয়ে হামলা চালিয়ে বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। ভারতের প্রতিক্রিয়া ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি পারভতনেনি হরিশ পাকিস্তানের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, পাকিস্তান নিজেই সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রীয় নীতিতে পরিণত করেছে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে মিথ্যাচার করছে। তিনি বলেন, যে রাষ্ট্র সন্ত্রাসকে লালন-পালন করে, তাদের পক্ষে বেসামরিক জনগণের সুরক্ষার পাঠ পড়ানোর কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই। পাকিস্তানের পাল্টা জবাব পাকিস্তানি প্রতিনিধি সাইমা সেলিম কড়া ভাষায় বলেন, কোনো ধরনের ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেও সত্য লুকানো যাবে না। ভারত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানে নিরীহ মানুষ হত্যা ও আহত করছে। তারা আমাদের দেশে এবং বিশ্বজুড়ে হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসের পেছনে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভারতের কাছে যদি লুকানোর কিছু না থাকত, তবে তারা নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন তদন্তে রাজি হতো। কিন্তু এর পরিবর্তে তারা কাশ্মীরের জনগণের উপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চাপিয়ে দিচ্ছে যাতে তাদের ন্যায্য স্বাধীনতা সংগ্রাম দমন করা যায়। পানি প্রবাহে বাধা নিয়েও অভিযোগ সাইমা সেলিম আরও অভিযোগ করেন, ভারত এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে তারা ২৪ কোটি পাকিস্তানির জীবনরেখা হিসেবে বিবেচিত নদীগুলোর পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে। সাম্প্রতিক হামলার উল্লেখ তিনি বলেন, চলতি মাসের শুরুতে ভারত পাকিস্তানে ‘উস্কানিমূলক আগ্রাসন’ চালায় এবং সাধারণ নাগরিকদের ওপর আঘাত হানে। এতে ৪০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৭ জন নারী ও ১৫ জন শিশু অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১২১ জন, যাদের মধ্যে রয়েছেন ১০ জন নারী ও ২৭ জন শিশু। সাইমা আরও বলেন, বেসামরিক সুরক্ষা নিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্যতা ভারতের নেই। তার দাবি, ভারত যদি সত্যিকারের শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক হয় এবং প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখতে চায়, তবে তাদের উচিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পথ পরিহার করা এবং কাশ্মীরিদের দমন বন্ধ করা।