সিলেটে ডিজেল সংকটে সেচকাজ ব্যাহত

১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

সিলেটে ডিজেল সংকট প্রকট। পেট্রোল, অকটেন ও কেরোসিন মার্জিন থাকলেও চাহিদা মিটছে না ডিজেলে। প্রতিদিন ১০ লাখ লিটার চাহিদার বিপরীতে তিন-চার লাখ লিটার ডিজেল পাচ্ছেন সিলেটের ডিলাররা। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে সেচকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় সংকট নিরসনে সিলেটে ২২ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পেট্রোল পাম্প ধর্মঘট আহ্বান করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। কর্মসূচি ঘোষণার দু'দিন পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সিলেটের জেলা প্রশাসক বৈঠক করেছেন পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতি, জ্বালানি পরিবেশক সমিতিসহ পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। বৈঠকে শর্ত সাপেক্ষে ধর্মঘট স্থগিত করে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রোববারের মধ্যে সমস্যা সমাধান না হলে ধর্মঘট চলবে। সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, সিলেটের জ্বালানি সংকট নিরসনে তিনটি তেল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশ্বাস দিয়েছেন। ট্রেনের ওয়াগনের কারণে তেল আসতে সমস্যা হলে তাঁরা আশুগঞ্জ ও ভৈরব থেকে তেল সিলেটে পৌঁছে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। আশা করি, চাহিদামতো তেল পাবে সিলেট। বৈঠক শেষে পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব জুবায়ের আহমদ চৌধুরী বলেন, তাঁরা আগেও এ রকম আশ্বাস দিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে যে তেল আসে, তা পর্যাপ্ত নয়। ব্যবসায়ীরা আশুগঞ্জ ও ভৈরব থেকে নিজ পরিবহন খরচে তেল নিয়ে আসেন। এতে বাড়তি খরচ হয়। কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, তারা আশুগঞ্জ ও ভৈরব থেকে তাদের ব্যবস্থাপনায় সড়কপথে তেল দেবে। দেখা যাক, তারা কথা রাখে কিনা। কথা না রাখলে রোববার থেকে ধর্মঘট চলবে। গতকাল নগরীর বিভিন্ন পাম্প ও ডিপো ঘুরে দেখা গেছে, চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জ্বালানি পাচ্ছেন না ক্রেতা ও ডিলাররা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সিলেটে ডিজেলের চাহিদা প্রতিদিন ১০ লাখ লিটার। অর্ধেকের কম তেল দিয়ে চলবে কীভাবে। ইচ্ছা করে সিলেটে সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পদ্মা অয়েল কোম্পানি সিলেটের ডিপো ইনচার্জ এ এফ এম মারুফ জানান, তেল এলে তাঁরা সরবরাহ করেন। কোনো সময় আসতে বিলম্ব হলে সংকট দেখা দেয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়। জ্বালানি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলেটে জ্বালানি সংকটের পেছনে বিভিন্ন কোম্পানির গাফিলতি রয়েছে। তারা চট্টগ্রাম থেকে রেলের ওয়াগনের মাধ্যমে তেল সিলেটে পাঠায়। কিন্তু জ্বালানিবাহী ওয়াগন ও রেলের ইঞ্জিন সংকটের অজুহাতে তা নিয়মিত পাঠানো হয় না। ফলে সংকট লেগেই থাকে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে সিলেটের ব্যবসায়ীরা সড়কপথে আশুগঞ্জ ও ভৈরব ডিপো থেকে তেল সংগ্রহ করেন। এতে বাড়তি খরচ হওয়ায় অনেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। সূত্রমতে, সিলেট বিভাগে পেট্রোল পাম্প রয়েছে ১১৪টি। বেশিরভাগ পাম্পেই ডিজেলের সংকট রয়েছে। পাশাপাশি পেট্রোল, অকটেন ও কেরোসিন সংকটেও ভুগছেন কোনো কোনো পাম্প মালিক। কোম্পানীগঞ্জের চদিবদি হাওরের কৃষক তজম্মুল আলী জানান, ডিজেল সংকটে সমস্যা হচ্ছে। খুচরা বাজারে যেমন দাম বেশি, তেমনি সব সময় পাওয়া যায় না। সিলেটে জ্বালানি সংকট বিষয়ে গতকাল জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে মেঘনা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুর রহমান জানিয়েছেন, সিলেটের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এখন থেকে ভৈরব ও আশুগঞ্জের ডিপো থেকে সিলেটে তেল পৌঁছে দেওয়া হবে।