অনিশ্চিত রাজশাহীর ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’

২২ মে, ২০২৫ | ১১:১৬ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

মধু মাস জ্যৈষ্ঠের শুরুতেই রাজশাহী ও আশপাশের বাজার ভরে উঠেছে মৌসুমী ফল আম ও লিচুতে। এসব আম-লিচু ঢাকায় পাঠাতে কয়েক বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকামুখী ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’ থাকলেও এবছর সেটি এখনো অনিশ্চিত। এবার এই ট্রেন চালুর ব্যাপারে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ। পশ্চিম রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষক ও ব্যবসায়ীদের আগ্রহের অভাবের পাশাপাশি গত কয়েক বছরের আর্থিক লোকসানও এবার বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। পশ্চিম রেলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন নিয়ে আগের অভিজ্ঞতা খুব ভালো নয়। চাষিরা তেমন আগ্রহ দেখান না। তাই এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মাঠপর্যায়ে সমীক্ষা চলছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের আগ্রহ থাকলে ট্রেন চালু হতে পারে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে প্রথম চালু হয় ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’। এরপর ২০২৩ সাল পর্যন্ত চার বছরে এই ট্রেনের মাধ্যমে মোট ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৮ কেজি আম পরিবহন করা হয়েছে। এতে রেল কর্তৃপক্ষ ভাড়া বাবদ আয় করেছে ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ১৪০ টাকা। কিন্তু ট্রেন পরিচালনার খরচ এর চেয়েও বেশি হওয়ায় রেলওয়ের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। গত বছর রাজশাহী থেকে ঢাকায় প্রতিকেজি আম পরিবহণে ট্রেন ভাড়া ছিল ১ টাকা ৪৩ পয়সা এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ১ টাকা ৪৭ পয়সা। তবে এত কম খরচে পরিবহণ সত্ত্বেও বাগান থেকে স্টেশন এবং স্টেশন থেকে বাজার পর্যন্ত পরিবহণ ও সময়ের বিড়ম্বনার কারণে অনেক চাষি ও ব্যবসায়ী আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। রাজশাহীর আম ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, আম পাড়া শুরু হয়েছে। আমরা এখন কুরিয়ার বা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানেই আম পাঠাচ্ছি। ট্রেনের সুবিধা আগেও পেয়েছি, তবে সেটিকে অনেকেই একটু ঝামেলার বলেই মনে করেন। অবশ্য কিছু ব্যবসায়ী ট্রেন ব্যবহার করেন। রাজশাহী কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জেলায় ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৬ মেট্রিক টন। পরিপক্ক আম বাজারজাত নিশ্চিত করতে এবারও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’। ঘোষিত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, গত ১৫ মে থেকে গুটি জাতের আম বাজারজাত শুরু হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার (২২ মে) থেকে গোপালভোগ নামানো শুরু হয়েছে। আগামী ২৫ মে থেকে নামানো যাবে লখনা ও রাণীপছন্দ জাতের আম। এরপর ৩০ মে থেকে হিমসাগর ও খিরসাপাত, ১০ জুন থেকে ল্যাংড়া ও ব্যানানা ম্যাংগো, ১৫ জুন থেকে আম্রপালি ও ফজলি, ৫ জুলাই থেকে বারি-৪, ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা এবং ১৫ জুলাই থেকে গৌড়মতি আম নামানো যাবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা জানান, এবার আমের উৎপাদন গতবারের তুলনায় বেশি। এখন পর্যন্ত দামও ভালোই রয়েছে। চাষিরা লাভবান হবেন বলেই আমরা আশা করছি।