যুবককে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার ভাইরাল ভিডিও নিয়ে তোলপাড়

২০ মে, ২০২৫ | ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চলন্ত ট্রেনের দরজার বাইরে ঝুলছেন এক ব্যক্তি। চলন্ত ট্রেনের দরজার বাইরে ঝুলছেন এক ব্যক্তি। কিন্তু ট্রেনের ভেতর থেকে কেউ তার হাত ধরে রেখেছেন। প্রাণে বাঁচার জন্য বার বার আর্তনাদ করার একপর্যায়ে ভেতর থেকে হাত ছেড়ে দিলে রেললাইনে পড়ে যান তিনি। রোববার (১৮ মে) বেলা ১টার দিকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নসরতপুর রেলস্টেশন এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই যুবকের নাম মতিউর রহমান। তিনি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পাড়ইল গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়ার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছেন। ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে বিদেশে লোক পাঠাচ্ছেন মতিউর রহমান। দুই বছর আগে তার মাধ্যমে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার তালসন গ্রামের সজীব নামের এক যুবক সৌদি আরবে যান। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর কাগজপত্রে সমস্যা থাকায় সজীব ইকামা (কাজের সুপারিশ সনদ) না পাওয়ায় তার পরিবারের সঙ্গে মতিউর রহমানের বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জেরে সজীবের নির্দেশে কয়েকজন যুবক গতকাল মতিউর রহমানকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। মতিউর রহমানের ছেলে আহসান হাবিব বলেন, ‘বাবা গতকাল দুপুরে বগুড়া থেকে দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেনে সান্তাহারে আসছিলেন। আসার পথে নসরতপুর রেলস্টেশনে আসার আগে বাবার কামরায় থাকা ১০ থেকে ১২ যুবক বাবাকে মারধর করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে চলন্ত ট্রেনের দরজা দিয়ে তারা বাবাকে নিচে ফেলে দেন। ট্রেন থেকে রেললাইনে পড়ে গেলেও ভাগ্য বলে ট্রেনের চাকা তার শরীরের ওপর দিয়ে যায়নি। তবে আঘাত লেগে একটা পা ভেঙে গেছে।’ তিনি আরও জানান, তার বাবাকে উদ্ধার করে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর মতিউর রহমান এখন বগুড়ায় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় কেউ মামলা নিচ্ছে না বলে দাবি করেন মতিউর রহমানের ছেলে আহসান হাবিব। অভিযোগের সূত্র ধরে সৌদি প্রবাসী সজিবের চাচা জাহাঙ্গীর আলমের কাছে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মতিউরের মাধ্যমে তার ভাতিজা সজিব সৌদিতে গেছে। কিন্তু মতিউর আমার ভাতিজার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সৌদিতে যে কোম্পানিতে কাজ করার জন্য পাঠাইছে তারা এখনো ইকামা দেয়নি। কিন্তু মতিউর আমার ভাতিজাকে ইকামা পাইয়ে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এখনো ইকামা দেওয়ার কথা বলে নানা টালবাহানা করতেছে। এ নিয়ে মতিউরের সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলতেছে। তবে তাকে ট্রেনে মারধর ও ফেলে দেয়ার বিষয়ে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই।’ বিষয়টি নজরে আনা হলে সান্তাহার রেলওয়ে জংশনের জিআরপি পুলিশ স্টেশনের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়তে আমরাও দেখেছি। তবে এ ঘটনায় জিআরপি পুলিশ স্টেশনে কেউ কোনো অভিযোগ দিতে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’