১৮ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ

৭ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১০:৪২ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শনিবার সারাদেশে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। দেশের ১৮টি জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। ঢাকার তাপমাত্রা আরও কমে গেছে। শনিবার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি থেকে কমে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। তবে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার কারণে বুধবার দিনভর দেশের কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি। তাই দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান কমে শীত আরও তীব্র হয়েছে। প্রচন্ড শীতের কারণে কুমিল্লার লাকসামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। ওই কৃষকের নাম সুমন মিয়া (৩২)। প্রচন্ড শীতের মধ্যে মাঠে কাজ করার সময় তার শরীর অবশ হয়ে আসে। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শুক্রবার রাতে তার মৃত্যু হয়। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আজ রবিবার থেকে দিনের কুয়াশা অনেকটা কমে যাবে। তবে রাতের কুয়াশা থাকবে। মূলত রবিবার থেকে তাপমাত্রা একটু বাড়তির দিকে থাকলেও ১০ অথবা ১১ জানুয়ারি তাপমাত্রা ব্যাপকভাবে কমতে থাকবে। তার মানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নামতে পারে।’ সারাদেশের মতো ভোগান্তি বেড়েছে রাজধানীর সাধারণ মানুষেরও। কনকনে শীতে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে ঘর-বাড়িহীন পথের মানুষের কষ্টের সীমা নেই। গত কয়েক দিন ধরেই সেভাবে দেখা মিলছে না সূর্যের। শনিবার ঢাকায় বিন্দুমাত্রাও দেখা যায়নি সূর্য। বরং দুপুরের পর ঢাকায় কুয়াশার মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। কনকনে বাতাস ও শীত থেকে বাঁচতে এই মানুষের ভিড় করছেন গরম কাপড়েরর দোকানে। আবহাওয়া অফিস জানায়, ‘দিন-রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় শীতের এই তীব্রতা বেড়েছে। সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া।’ কুয়াশার দাপটও চোখে পড়ার মতো। আর শীত বাড়তে থাকায় সাধারণ মানুষের জীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। এবারের বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে গৃহহীন, ছিন্নমূল ও কর্মজীবীদের। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। শীতে শিশুদের ঝুঁকিটাও বেশি। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার দিনভর কুয়াশার কারণে শৈত্যপ্রবাহের আওতা আরও বেড়েছে। বর্তমানে দেশের ১৮ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। তবে তা কিছু অঞ্চলে প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশের রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা ও বরিশাল জেলাসহ রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু এলাকায় প্রশমিত হতে পারে। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে সারাদেশে মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা একদিন আগে ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায়ও শনিবার ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে কিছুটা কমে হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতে নিম্নবিত্তদের অবস্থা ॥ ঠা-ায় নগরীতে নিম্নবৃত্ত ও ছিন্নমূল মানুষকে পোহাতে হচ্ছে নানা ভোগান্তি। শীতে জবুথবু অসহায় প্রাণীরাও। সেগুনবাগিচা এলাকায় একটি গ্যারেজের সামনে আগুন পোহাতে দেখা যায় চার জনকে। এদের দুজন নিরাপত্তা প্রহরী বাকিরা গ্যারেজে কর্মরত। তারা বলেন, হঠাৎ নেমে আসা ঠা-ায় আগুন না জ্বালিয়ে উপায় ছিল না। এখনই আমরা শীত সইতে পারতেছি না। সামনেতো পৌষ মাস আসছে, তখন কি হবে বুঝতেছি না। আগুন পোহাতে আসেন রিকশাচালক নাজমুল আলী। তিনি বলেন, রিক্সা নিয়ে বের হলে হাত-পা জমে যাচ্ছে। বেশিক্ষণ রিক্সা চালাতে পারি না, পকেটেও টাকা নেই। আগুন জ্বালানো দেখে এলাম। গরম কাপড়ের ব্যবসা রমরমা ॥ রাজধানীর আইডিয়াল স্কুলের সামনে, মতিঝিল শাপলা চত্বর, পল্টন, গুলিস্তান ও বায়তুল মোকাররম শীতের গরম কাপড় কেনার হিড়িক পড়ে যায়। এ সুযোগে দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন হকাররা। হঠাৎ করে শীত বেড়ে যাওয়াই এখন অনেকেই গরম কাপড় কিনছেন। এ সুযোগে বিক্রেতারা বেশি দাম নিচ্ছে। পঞ্চগড় ॥ শীতের প্রকোপে কাহিল উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। জেলাজুড়ে দুদিন ধরে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। দুদিন ধরে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রার রেকর্ডে প্রবাহমান শৈত্যপ্রবাহ। সপ্তাহজুড়ে হিম বাতাসে ঠান্ডায় কাঁপছে এ জনপদের মানুষ। ভোর থেকেই বেলা অবধি ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে জেলার চারপাশ। প্রয়োজন ছাড়া অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী-কর্মজীবী গরিব অসহায় মানুষ। এতে করে স্থবির হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলার জীবনযাত্রা। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার পাদদেশে জেলাটির অবস্থান থাকায় এই মৌসুমে তীব্র শীতের মুখে পড়েছেন এ অঞ্চলের সর্ব সাধারণ মানুষ। বিকেল গড়ালেই উত্তর-পূর্বকোণ থেকে বইতে থাকে ঠান্ডা বাতাস। নিম্নবিত্ত মানুষগুলো শীতবস্ত্রের অভাবে ফুটপাতের দোকানগুলোতে সাধ্যমত কিনছে গরমের কাপড়। শীতের তীব্রতায় দুর্ভোগের শেষ নেই খেটে খাওয়া মানুষের। ভোর-সকালে শীতের তীব্র প্রকোপের কারণে কাজে যেতে পারছেন না অনেকে। তবুও পেটের তাগিদে কাউকে নদীতে পাথর তুলতে, কাউকে চা-বাগানে আবার কাউকে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে। শীতের দুর্ভোগ বেড়েছে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে। এসব মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য সরকার যে ত্রাণ দিয়েছে তা একেবারেই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। গ্রামীন নারীরা জানান, সন্ধ্যার পর বাতাসের সঙ্গে ঝরতে থাকে বরফের মতো ঠান্ডা। এ সময়টাতে মাত্রাতিরিক্ত শীত অনুভূত হচ্ছে। রাতে কম্বল ও লেপ নিলেও বিছানা বরফের মতো লাগে। চুয়াডাঙ্গা ॥ জেলায় শনিবার সকালে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় শনিবারের তাপমাত্রা সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান। দুদিন ধরে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রার রেকর্ডে প্রবাহমান শৈত্যপ্রবাহ। হিম বাতাসে ঠান্ডায় কাঁপছে এ জনপদের মানুষ। সদর হাসপতালে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৫ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। যশোর ॥ জেলায় শনিবার সকালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ৯ এবং শুক্রবার ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। গত কয়েকদিনের মতো সকালে ছিল ঘন কুয়াশা। সেই সঙ্গে মৃদু বাতাস। মূলত বাতাসের কারণে শীত বেশি অনুভূত হয়। দুপুরে ঘন কুয়াশা কমলেও বিকেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘন কুয়াশা লক্ষ্য করা যায়। ফলে শীত ফের সকালের মতো অনুভূত হতে থাকে। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় মানুষ জনের চলাচল এমনিতেই কম ছিল। বরাবরের মতো যশোরে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। নীলফামারী ॥ শীতে কাহিল উত্তরাঞ্চলের নীলফামারীর প্রাণ-প্রকৃতি। ফাঁকা মাঠে ঠান্ডা বাতাসের গতি অত্যন্ত বেশি থাকায় সেচ নির্ভর বোরো আবাদে প্রস্তুতি নিতে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। শনিবার শৈত্যপ্রবাহে হাড়হিমে সর্বোচ্চ এবং সর্বনি¤œ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই নিচে নেমে গেছে। হিমালয় ও দার্জিলিংয়ের বরফ ছোঁয়া বাতাসের শৈত্যপ্রবাহ হাড় কাঁপিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। রংপুর ॥ জেলায় শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উষ্ণতা নিতে গিয়ে কোথাও কোথাও ঘটছে অগ্নিদগ্ধের ঘটনাও। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় অগ্নিদগ্ধ এমন ৫ নারী রমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কারও শরীরের ৭০-৮০ শতাংশ, কারও আবার ৪০-৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। শনিবার দুপুরে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. এম এ হামিদ পলাশ জানান, চিকিৎসাধীন বেশির ভাগ রোগীই শীতের তীব্রতা থেকে উষ্ণতা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। এদিকে আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার সকাল ৬টায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি। কুড়িগ্রাম ॥ জেলায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। শনিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতজনিত কারণে শিশু ও বয়স্করা শ^াসকষ্ট, নিউমেনিয়া ও ডায়েরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে হাসপাতাল ও ফার্মেসিগুলোতে রোগীদের ভিড় বাড়ছে। নওগাঁ ॥ শনিবার জেলায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। আর হিমেল বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১ কিলোমিটার। বদলগাছী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এক সপ্তাহ ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কিছু বেশি কিংবা তার কম থাকছে। মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এদিকে হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি। রাজশাহী ॥ শনিবার দুপুরের পর কিছু সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও তার নিরুত্তাপ আলো শীতার্ত মানুষের শরীরে উষ্ণতা ছড়াতে পারছে না। এমন বৈরী আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল ও শ্রমজীবী মানুষ। কৃষিতেও দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রভাব। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার ভোর ৬টায় রাজশাহীর সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এটিই চলতি মৌসুমে রাজশাহীর সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর রাজশাহীতে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এদিকে ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকরা। বিশেষ করে জমির বোরোতে কোল্ড ইনজুরি ও আলুতে লেটব্লাইট (পচন) দেখা দেয়। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। চাটমোহর ॥ উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ভারি শৈত্য প্রবাহের কারণে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাস বেড়েই চলছে। কয়েকদিন সূর্যের দেখা মেলেনি চলনবিল অঞ্চলে। তবে শুক্রবার ও শনিবার চলনবিলের আকাশে কিছু সময় আবছা রোদ উঁকি দিয়েছে, কিন্তু শীতের তীব্রতা কমেনি। গত তিনদিন চাটমোহরে সর্বনি¤œ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সিরাজগঞ্জ ॥ রায়গঞ্জে টানা কয়েকদিনের হাড়কাঁপানো শীতে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশু কাবু হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড শীত, ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়া আর প্রচ- ঠান্ডা জ্বর, সর্দিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এ অঞ্চলের গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন প্রাণিকুল। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দাবি এখন পর্যন্ত প্রাণিকুলে রোগবালাই আক্রমণ দেখা যায়নি। মাগুরা ॥ শনিবার কুয়াশা কুছুটা কমলেও আকাশ মেঘলা রয়েছে। ফলে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। হিমেল হাওয়ার সঙ্গে রাতে বৃষ্টির মতো শিশির পড়েছে। শীত ও হিমেল হাওয়ার কারণে শ্রমজীবী মানুষের চরম দুর্ভোগে পড়েছে। শীতের কারণে বৃদ্ধ ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। রাজবাড়ী ॥ ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত টানা সাড়ে ৩ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। এ সময় মাঝ নদীতে ৩টি ফেরি বিভিন্ন প্রকার যানবাহন নিয়ে আটকা থাকতে দেখা যায়। তবে ঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোর্ড, লঞ্চ ও ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচল করেছে। শনিবার সকালে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাট এলাকা সরেজমিন ঘুরে ঘাট সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। চাঁদপুর ॥ পৌষের শেষ সপ্তাহে জেলায় সর্বনি¤œ তামপাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার চাঁদপুর আবহাওয়া অফিস থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতি ও শুক্রবার টানা দুদিন সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই সময়ে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত। এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে চাঁদপুর-ঢাকা রুটের মধ্যে লঞ্চ চলাচল এবং চাঁদপুর-শরীয়তপুর রুটে ফেরি চলাচল অনেকটা ব্যাহত হচ্ছে। হবিগঞ্জ ॥ পৌষের প্রচন্ড শীতে ২৯ ডিসেম্বর থেকে শনিবার পর্যন্ত ৮০০ শিশু হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জেলায় প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে। ঠান্ডায় সর্দি, জ্বর, কাশি, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। নরসিংদী ॥ জেলায় ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নরসিংদী সদর, পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব ও রায়পুরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় নিম্ন আয়ের লোকজন শীতের কাপড়ের অভাবে খরকুটো জ্বালিয়ে কোনোরকমে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। দিনমজুর কৃষক-শ্রমিকেরা অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে কাজে যেতে পারছে না। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা। দাউদকান্দি ॥ শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম কাপড়ের বিকিকিনির হিড়িক পড়েছে দাউদকান্দিতে। এরই মধ্যে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে গরম কাপড়ের কদর বেড়ে গেছে। তাই হঠাৎ গরম কাপড় বেচাকেনায় ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা। শীতের হাতে থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ গরম উষ্ণতার ছোঁয়া পেতে গরম জামা কাপড় কিনতে ফুটপাত ও আশপাশের মার্কেটের দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন।