জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রাজধানীতে তীব্র যানজট

তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পুলিশের হামলার বিচার ও দীর্ঘদিনের আবাসন সংকটসহ বাজেট এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে শিক্ষার্থীদের এ লাগাতার আন্দোলন মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও শিক্ষার্থীদের যোগ দিতে দেখা গেছে। দুপুর গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরও ছাত্রছাত্রীরা জড়ো হতে থাকেন। অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসে করে কাকরাইলে উপস্থিত হন।এর আগে বুধবার (১৪ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া অবস্থান কর্মসূচি চলে গভীর রাত পর্যন্ত। শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং সড়কের মাঝখানে বসে বিভিন্ন স্লোগান দেন। অবস্থান কর্মসূচির কারণে মৎস্যভবন থেকে কাকরাইলমুখী সড়কে শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড দিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে কাকরাইল, মৎস্যভবন, হাইকোর্ট, শাহবাগসহ আশপাশের এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। অফিসগামী মানুষসহ সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। এদিকে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কেন্দ্র করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে কাকরাইল এলাকায়। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের একটি দল তাদের দাবি নিয়ে ইউজিসিতে গেলেও আশানুরূপ কোনো সাড়া না পাওয়ায় ‘জুলাই ঐক্য’ নামে শিক্ষার্থীদের একটি প্ল্যাটফর্ম ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরদিন বুধবার শিক্ষার্থীরা মৎস্যভবন অতিক্রম করে কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে।এ সময় পুলিশের টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জে আহত হন বহু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। অনেককে চিকিৎসা নিতে হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো— ১. বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করা। ২. বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন দেওয়া। ৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা। শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। তবে কাকরাইলসহ আশপাশের এলাকায় জনদুর্ভোগ বাড়তে থাকায় দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগীরা।