বিএনপির হুমকিতে শেখ হাসিনা ভয় পান না

৬ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৮:২৫ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলনের হুমকিতে শেখ হাসিনা ভয় পান না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেঁজগাওয়ে সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির ৩০তম সম্মেলন উদ্বোধনকালে এসব বলেন তিনি। তিনি বলেন, বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলনের হুমকিতে শেখ হাসিনা ভয় পান না। তাদের আন্দোলনের হুমকি-ধমকিতে জনগণ হাসে। অনেকে বলেছিল এই হবে, সেই হবে দেশ সংঘাতে যাবে। কিন্তু কিছুই তো হলো না। বিএনপির কথা শুনলে এখন ঘোড়াও হাসে। ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু মানুষ টাকা ছাড়া কিছুই বুঝে না। তাদের আরও টাকা দরকার, আরও সম্পদ দরকার। কেউ কেউ কষ্টার্জিত টাকা বিদেশে পাচার করে, তাদের আমরা ঘৃণা করি। এই দেশ আরও উন্নত হবে যদি সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি, চুরি, পাচার বন্ধ করতে পারি। ভালো কাজের জন্য প্রশংসা পাবে আবার খারাপ কাজের জন্য শাস্তি পেতে হবে। সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের বিরোধীতা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজন ছাড়া যেসব সরকারি কর্মকর্তা বিদেশে ভ্রমন করতে যায়, এটা আমাদের ভাবায়। সরকারি চাকরীজীবীদের কোন একটা কারণ দেখিয়ে বিদেশে যেতেই হবে। এই বিদেশ ভ্রমণ কেন? অনেকে চিকিৎসার জন্য কথা বলে যায়, কেউ কেই হয়তো আসলেই চিকিৎসা করতে যায়। সব বিষয়য়ে বাস্তবতা উপলব্ধি করতে হবে। প্রকৌশলীদের সৎ থাকার পরামর্শ দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। আমাদের রেমিটেন্স বাড়তে শুরু করেছে। এখানে অনেক ভালো মানুষ আছে। আর যারা ফাঁকি দিচ্ছেন তারা দেশকে ফাঁকি দিচ্ছেন। নিজেকে ফাঁকি দিচ্ছেন। যে অপকর্ম করবে ফাঁকি দিবে মানসম্বত কাজ করবে না, তার জীবন ব্যর্থ জীবন। যা চির জীবন থেকে যাবে। এর ভাগ পরিবারকেও বহন করতে হবে। ছেলে মেয়েদেরও ভালো খারাপ দুটো কাজেরই ভাগ নিতে হবে। কত টাকা দরকার একজন মানুষকে ভালোভাবে জীবন যাপন করতে? আমাদের বিবেলকে জিজ্ঞাসা করার সময় এসেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাংলাদেশ এখন উন্নত রাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেছে। বিএনপি যদি শান্তিপূর্ণভাবে কিছু করে তাহলে তাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে স্বাগত জানাই। তবে জানমালের ক্ষতি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ‘ডেড ইস্যু’উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এদেশে আর কোনোদিন তত্ত্ববধায়ক সরকার আসবে না। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যার প্রমাণ বিগত কয়েকটি নির্বাচনে দেখা গেছে। নির্বাচন কমিশন দেশে স্বাধীনভাবে কাজ করছে। সরকারের পরিবর্তন চাইলে সব দলকে অবশ্যই নির্বাচনে আসতে হবে। ক্লাইমেট চেঞ্জ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পুরো বিশ্বকে বদলে দিয়েছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ ইউরোপ-আমেরিকায় মন্দা দৃশ্যমান। করোনা এখনও ছাড়েনি। কবে যাবে, কেউ জানে না। চীন এখনও এর ফলভোগ করছে। এসবের রেশ আমাদের এখানেও চলছে। তিনি বলেন, তারপরও এখানে একজন রূপকার আছেন। সেই রূপকারের সঠিক সময়ে সঠিক ও সময়োপযোগী নেতৃত্বে শেখ হাসিনা আছেন। তিনি আছেন বলেই বিনা পয়সায় করোনার ভ্যাক্সিন দিয়েছি। এ বিশ্ব সংকটেও বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে এবং ঘুরে দাঁড়াবে। সড়ক পরিহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি আয় বেড়েছে; রেমিটেন্সও বাড়তে শুরু করেছে। এখনও রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন। যেটা দিয়ে ৫ মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবো। মেডিকেল চেক আপের জন্য গিয়েছিলাম সিঙ্গাপুরে। সেখানে আমাদের রাষ্ট্রদূত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের রেফারেন্স দিয়ে জানান, ওই দেশটির রিজার্ভ ৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে। দেশে আসার পথে শুনলাম হাফ বিলিয়নের নিচে নেমে গেছে। শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা হয়েছে পাকিস্তানেরও। কিন্তু শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি সৈয়দ মঈনুল হাসানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক, সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এদিকে ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোটের গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতা, ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি শেখ হাসিনার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত রাখার কারণেই আর্থ-সামাজিক সকল সূচকেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী নতুন বছরের উপহার হিসেবে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান মাধ্যম মেট্রোরেল সেবার শুভ উদ্বোধন করেছেন। সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের কল্যাণে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। স্বপ্নের পদ্মাসেতুর মতো বৃহৎ বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। একের পর এক মেগাপ্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৫ জানুয়ারি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আদর্শ ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধবিরোধী অপশক্তির হত্যা-ষড়যন্ত্র নৈরাজ্য-সহিংসতা ও অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী, শান্তিকামী ও মুক্তিকামী বাঙালি জাতির বিজয়ের দিন। বাংলাদেশের সংবিধান, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয়ে উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মিছিলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনে দেশের সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত এবং জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের ধারা সমুন্নত রাখতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম। বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিএনপি গণতন্ত্রের অন্তির্নিহিত আদর্শ ও মূল্যবোধবিরোধী রীতিনীতিকে লালন-পালন করে আসছে। অপরাজনীতি ও দুঃশাসনের কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ তাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রত্যাখ্যান করে। নিরঙ্কুশভাবে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন ও অগ্রগতির পাশাপাশি রাজনীতির মাঠে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি নিজেদের ভঙ্গুর অবস্থানের কারণে যে কোনো উপায়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিহত করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তখন তাদের প্রাইম টার্গেট ছিল মানবতাবিরোধী ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করা।